মারা গেলেন অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু। খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম। তিনি বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিনেত্রী মারা গেছেন। সংঘের পক্ষ থেকে হাসপাতালে যাওয়া হচ্ছে। এরপর বিস্তারিত জানানো হবে।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বেশ ক’বছর ধরেই ক্রমশ অন্তরালে চলে যাচ্ছিলেন প্রতিভাবান অভিনেত্রী হিমু। অনেকেই বলছেন, এটি আত্মহত্যা। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত।
এ প্রসঙ্গে আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘পোস্টমর্টেম ছাড়া এই বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলা যাবে না। এটা তো হত্যাও হতে পারে। কারণ, তাকে (হিমু) দুপুর সাড়ে ৩টায় একটি ছেলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক দেখতে পান হিমু তখন মৃত। এরপর যে ছেলে নিয়ে এসেছে সেও পালিয়ে গেছে হিমুর ফোন-ব্যাগ নিয়ে। খবর পেয়ে এখন আমরা পুরো বিষয়টি টেকওভার করছি। ঘটনাটি শিল্পী সংঘ সিরিয়াসলি ডিল করছে। ফলে এটাকে এখনই আত্মহত্যা বলে প্রচার করা ঠিক না।’
শূন্য দশকের শুরুর দিকে মিডিয়ায় পা রাখেন এই সম্ভাবনাময়ী। দশকজুড়ে কাজ করে অসংখ্য একক ও ধারাবাহিক নাটকে। প্রশংসিত হয়েছেন সিনেমায় কাজ করেও। বিশেষ করে ২০১১ সালে মোরশেদুল ইসলামের পরিচালনায় ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য দারুণ প্রশংসিত হন এ অভিনেত্রী।
কথিত প্রেমিক রাফি গ্রেফতার
অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত তার পলাতক কথিত প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রাফিকে শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে যান রাফি। হিমুর মরদেহ রেখেই পালিয়ে যান অভিনেত্রীর সেই বন্ধু। অভিনেত্রীর মৃত্যুর পরই তিনি হিমুর মোবাইল ফোনসহ পালিয়ে যান। বিবাহিত রাফির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হিমুর।
হিমুর কথিত প্রেমিক রাফি সম্পর্কে এখনো তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অভিনেত্রীর সহকর্মীরাও তাকে চেনেন না। কারণ ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হিমু কাউকে কিছু বলতেন না।
অভিনেত্রীর কাছের সহকর্মী অভিনেতা প্রাণ রায় জানিয়েছেন, তিনি কখনো প্রেমিক রাফির নাম শোনেননি। তা ছাড়া ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও তাদের সঙ্গে আলোচনা হতো না।
জানা গেছে, অনলাইন প্ল্যাটফরম ভিগো লাইভের সাপোর্টার ছিলেন রাফি। হিমুও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই তাদের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।
রাফি প্রায়ই হিমুর ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন। মাঝে মাঝে তারা একসঙ্গে থাকতেন। ঘটনার দিন বিকাল ৩টার দিকে হিমুর বাসায় গিয়েছিলেন রাফি। পরে তাদের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। তখন হিমুর পালিত ভাই মিহির ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন। হিমু ঘরে একাই ছিলেন। এর পর মিহির বের হয়ে দেখেন হিমু ফ্যানের হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ঝুলছে। রাফি ও মিহির তখন হিমুকে হাসপাতালে নিয়ে যান।