দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এবার সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে নারী প্রার্থীদের। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ফরম বিক্রি শুরু হয়।
এদিন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আন্দোলন-সংগ্রমে দলের জন্য নিবেদিত অনেক নেত্রী। পাশাপাশি আছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকা শিল্পী ও অভিনেত্রীরাও।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন ফরম নেওয়া অভিনেত্রীরা হলেন- অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, সৈয়দা কামরুন নাহার শাহনূর, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সোহানা সাবা, তানভিন সুইটি, মেহের আফরোজ শাওন ও জাকিয়া মুন। তাদের মধ্যে প্রায় ১২ বছর আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর।
সোহানা সাবা বলেন, আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৩ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তিনি শুধু আওয়ামীলীগপন্থিই ছিলেন না, তিনি দেশপ্রেমিক ছিলেন। দেশের কথা ভাবলে আওয়ামী লীগের কথা ভাবতে হবে। এটা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। আমরা খুবই ভাগ্যবান যে টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, ইনশাল্লাহ আরও পাঁচ বছরও থাকবে। সেজন্য আমি অবশ্যই চাই আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে।
দলের মনোনয়ন পেতে আশাবাদী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আমি জড়িত। তাই আমি অনেক আশাবাদী। যেহেতু আমার রাজনীতির ক্যারিয়ার অনেক লম্বা। এলাকাসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। মনোনয়ন পেলে কাজের পরিধিটা আরও লম্বা হবে।
মনোনয়ন ফরম কেনার পর অভিনেত্রী সৈয়দা কামরুন নাহার শাহনূর বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। বিরোধী দলের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে মাঠি ছিলাম। আমি নিজেও সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনীত করলে আমি তার কথা অনুসারে কাজ করতে চাই। এছাড়া নারীদের জন্য কাজ করতে চান বলে জানান তিনি।
অপু বিশ্বাস বলেন, রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছি। আমার এলাকার মানুষ আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। দোয়া রাখবেন, আমি যেন এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যেন কাজ করতে পারি। নিজেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে পারা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে থাকতে পারা আমার জন্য সৌভাগ্য বলে মনে করি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলাম। বাকিটা মহান আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা।
নিপুণ বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। কমান্ডার ছিলেন সেক্টর চার-এ, তারপর দেশের প্রথম বিসিএস ক্যাডারদের একজন ছিলেন। এছাড়া আমিও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত। আমার মনে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি যোগ্য মনে করেন তাহলে আমার কথা চিন্তা করবেন। আমি একটা কথাই বলব- আপনারা সবাই দোয়া করবেন, যেই দোয়াটা করেছিলেন শিল্পী সমিতির নির্বাচনে।
তানভিন সুইটি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী। অনেকদিন ধরেই এই দলের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি পাশাপাশি একজন অভিনেত্রীও। একজন দলীয় কর্মী হিসেবে মনোনয়ন তুলছি। আমি প্রত্যাশা করব আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে দলের হয়ে কাজ করব, দেশের মানুষের জন্য কাজ করব, শিল্পী-সাংবাদিকদের জন্যও কাজ করব।
নবাগত নায়িকা জাকিয়া মুন বলেন, প্রত্যাশা দেশের জন্য কাজ করব, মানুষের জন্য কাজ করব। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে বাইরে তুলে ধরব। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমার বাবা বেঁচে নেই, তাই আমার সঙ্গে এলাকার অন্য মুক্তিযোদ্ধারা এসেছে তারাই আমার পরিবার। আমি আসলে এলাকার মানুষের চাওয়ায় মনোনয়ন ফরম তুলতে এসেছি।
এদিকে, আগামী বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের শোবিজ অঙ্গন থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন আসাদুজ্জামান নূর, মমতাজ বেগম, ফেরদৌস আহমেদ, মাহিয়া মাহি, ডলি সায়ন্তিনী, নকুল কুমার বিশ্বাস। যাদের মধ্যে অধিকাংশই পরাজয়ের মুখ দেখেছেন। জয়ের দেখা পেয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর ও ফেরদৌস আহমেদ।