আমেরিকায় বসন্তের হাওয়া-বসন্ত জাগ্রত দ্বারে দ্বারে

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০৮

বুধবার সকাল আটটা। ক্যানসাসের উচিটার গ্রেট প্লান ন্যাচার সেন্টার। সুনশান নীরবতা- কোথাও কেউ নেই। পার্কে ঢুকতে প্রকৃতি যেন দুহাতে ডাক দিয়ে বলে - আয় দেখে যা; আমি সেজেছি রংয়ের সাজে। পার্কের দুধারে থোকা-থোকা নানা রংয়ের বাহারী ফুলের সমাহার। পার্কের উচু-নীচু, আঁকা-বাকা পথ ধরে লেকের স্বচ্ছ জলে হাস-বকের দৌড়ঝাপ। লেকের পাড়ে মায়াবী হরিণের লুকোচুরি।
কদ্দূর যেতে ন্যাচার সেন্টার কর্তৃপক্ষের দুই কর্মকর্তা প্রকৃতির বদলের সাথে পার্কে সাইন বদলিয়ে দিচ্ছে। এতে লিখা রয়েছে ‘বিজি স্প্রিং - ন্যাচার ওয়েকস আপ’- বসন্তের আগমনে প্রকৃতি জেগে উঠেছে। পাতা ঝরার দিন শেষ হয়েছে। পত্রপল্লব জেগে উঠে গাছে গাছে নতুন করে সঞ্চার হয়েছে জাগরণ। পাতায় পাতায় নতুন রং লেগে পাখি, প্রজাপতি আর সৌন্দর্য পিপাসু পতঙ্গদের ডেকে বলছে, আয় আমার এখানে আয়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বসন্তের পাখি ও কীট-পতঙ্গরা ভিড় জমায় গাছের পাতায় পাতায়, ফুলে ফলে।  
অনাদিকাল থেকে পৃথিবীর নানা দেশে ঋতুর পরিবর্তন হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ছয়- আমেরিকাতে চার ঋতু। শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম আর হেমন্ত কালের এই সময়গুলোকে চাইলেও উপেক্ষা করা যায় না। প্রতিটি ঋতুর রুপ, রস, গন্ধ আমেজ এত ভিন্ন যে ধরত্রী ধণ্য হয়ে ওঠে সবখানে। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের কথায় প্রকৃতিতে বসন্তের আবেদন প্রাণে সঞ্চার করে নতুন আশা।

জীবন মানে দিন বদলের খেলা। পৃথিবীর যেখানে বাঙালির বসবাস। সেখানে তাঁরা ফিরে যেতে চাই প্রকৃতির খুব কাছে। মানব জীবনে বসন্তের উপস্থিতি আর আয়োজন প্রাচীনকাল থেকে বসন্ত ঠাঁই করে নিয়েছে স্বমহিমায়। প্রকৃতি কানে কানে বলে যায়, আজ ভুলিয়ো আপন পর ভুলিয়ো। আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে। কনকনে শীত শেষে আমেরিকায় এ সময় প্রায় প্রতিটি গাছের পাতা ঝরে গিয়ে পাতায় পাতায় রঙ লাগতে শুরু করে। এ সময় গাছে গাছে লাল, হলুদ, সবুজ, বাদামী, খয়রী, কমলা নানা রংয়ের খেলায় মেতে উঠে প্রকৃতি। প্রকৃতির এ অপরুপ সেীন্দর্য্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।  আমেরিকাজুড়ে প্রকৃতির এ রংয়ের খেলা দেখতে দর্শনাথীর ভিড় জমায়। বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই কচিপাতায় আলোর দোলা। যেখানে নতুন প্রাণের কলরব; সেখানে বসন্ত বর্ণিল সাজে ফুলের বর্ণচ্ছটায় নিজেকে রাঙিয়ে সবার খুব কাছে এসে ধরা দেয়।