কারো মৃত্যুর খবর শুনলেই ছুটে যান আবল হোসেন (৯৪)। এরপর খোঁড়া শুরু করেন মৃত ব্যক্তির জন্য কবর। দিন কিংবা রাত যেকোনো সময় কবর খোঁড়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন তিনি। তবে, এই কাজের জন্য তিনি কখনোই কারো কাছ থেকে পারিশ্রমিক নেন না। গত ৭০ বছর ধরেই এভাবে স্থানীয়দের জন্য কাজটি করে যাচ্ছেন এই বৃদ্ধ।
পেশায় দিনমজুর আবল হোসেনের বাড়ি জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়নের চরপলিশা গ্রামে। এখন পর্যন্ত ৫০০ জনের বেশি মানুষের জন্য কবর খুঁড়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আবল হোসেন বলেন, আমি ২৪ বছর বয়স থেকেই কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করি। গত ৭০ বছর ধরে মারা যাওয়া মানুষের জন্য কবর খোঁড়ার কাজ করছি। এই কাজটি করতে আমার ভালো লাগে।
তিনি আরও বলেন, বয়স হয়েছে। এখনো আল্লাহ আমার শরীর ভালো রেখেছেন। আমি এখনো কাজ চালিয়ে যেতে পারছি। আল্লাহ যতদিন কাজ করার সুযোগ দেবেন ততদিন কাজ চালিয়ে নেব। কবর খোঁড়ার কাজ করে যেতে চাই। কাজের সম্মানীর বিষয়ে জানতে চাইলে আবল হোসেন বলেন, কবর খোঁড়ার জন্য কারো কাছ থেকে টাকা নেই না। খুশি হয়ে কেউ কিছু দিলেও নেই না। শুনেছি সরকার অনেক মানুষকে ভাতা দেয়। আমিও ভাতার জন্য চেষ্টা করেছি। আমি মেম্বার, চেয়ারম্যান ও নেতাদের পেছনে অনেক ঘুরেছি। কিন্তু কেউ করে দেয়নি। আমি কষ্টে থাকলেও এখনো মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে আছি।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, আবল হোসেন আমাদের এলাকার মারা যাওয়া মানুষদের জন্য কবর খোঁড়ার কাজটি করেন। অনেক কষ্টে তিনি এখন দিন অতিবাহিত করছেন।
চরবানি পাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আনিসুর রহমান রিপন বলেন, আমি প্রথমবার মেম্বার হয়েছি। উনি আমার কাছে এখনো আসেননি। আমি চেষ্টা করবো দ্রুত আবল হোসেন ভাইয়ের বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিতে। আবল হোসেন ভাইকে আমরা বছরের বছর ধরে কবর খোঁড়ার কাজ করতে দেখছি।