সুদিনের স্বপ্ন: নগদের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা 

সাঈদ তারেক
  ০৯ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩৭

বাবা হারানো মেয়ে ফারহানা। মা আর বোনকে নিয়ে শিকার হয় পারিবারিক বৈষম্যের। ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে একরকম বাড়ি ছাড়া হন ফারাহানার মা। মা-বোনকে নিয়ে কষ্টের দিনে ফারহানাদের সহায় হয়েছিল নগদের মাধ্যমে বিতরণ করা সরকারের ভাতার উপবৃত্তির টাকা।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
ফারহানার মতো এমন অনেক পরিবারের বদলে যাওয়ার গল্পে মিশে গেছে দেশের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ। তেমনি মুন্সিগঞ্জের মিলি আক্তার। স্বামী-সন্তান নিয়ে যিনি হয়ে উঠেছেন একটি সংসার গড়ার কারিগরে। কিংবা বলা যায় নারায়ণগঞ্জের একটি গ্রামের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আরিফা আলফাজের কথা, সেলাই মেশিন আর নগদ-এর মাধ্যমে পাওয়া ভাতা বদলে দিয়েছে যার জীবনের গল্প।
শত-সহস্র নারীর জীবন বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা আছে নগদের ঝুলিতে। নারী দিবসে এমন নারীদের জীবনের ঘটনা অনেক নারীকেই নতুন করে হয়তো আশার আলো দেখাতে পারে।
নবম শ্রেণি পড়ুয়া ফারহানা আক্তার বলছিল তাদের দুঃখের দিনের কথা। বাবা মারা যাওয়ার পর আত্মীয়দের দেওয়া লাঞ্ছনা ও অধিকারবঞ্চিত হয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন তার মা। পরে সংসারের অভাবে মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসারের হাল ধরেন ফারহানার মা। সেদিনের কথা বলতে গিয়ে ফারহানা বলছিল, ‘আমাদের অভাবের কারণে বড় দুইবোনের বিয়ে দিয়ে দেন মা। আমার পড়ালেখাও অনিশ্চিত হয়ে যায় অনেকটা। সেই সময়ে সরকারের উপবৃত্তির ভাতা আমার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। উপবৃত্তির টাকা পাই নগদের মাধ্যমে, চাইলেই যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় তুলতে পারি উপবৃত্তির টাকা।’
ফারহানা বলছিল, উপবৃত্তির টাকায় এখন তার পড়ালেখা চলছে। সামনে সরকারি সহায়তায় সে উচ্চশিক্ষা নিতে চায়, পরিবর্তন করতে চায় নিজেরসহ মায়ের ও পরিবারের ভাগ্য।
নগদের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণের ঘটনায় দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বিপুলভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি সরকারের সামাজিক সুরক্ষার ভাতার কারণে অনেক পরিবার পেয়েছে টিকে থাকার সহায়।
করোনা মহামারির সময় সংসার চলছিল না আরিফা আলফাজের। সরকারের মহিলা সমিতি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেলাই মেশিন কিনে শুরু করে টিকে থাকার লড়াই, এই লড়াইয়ে সঙ্গী হিসেবে পান নগদকে। কারণ মহিলা সমিতির মাধ্যমে সরকারের বিতরণ করা ভাতা উপকারভোগীর কাছে পৌঁছে যায় নগদের মাধ্যমে।
নিজের জীবনের বাঁক পরিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে আরিফা আলফাজ বলেন, ‘করোনার সময় স্বামী-সন্তান নিয়ে বেকায়দায় পড়ে যাই, লকডাউনে স্বামীর উপার্জন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সেই জায়গা থেকে মহিলা সমিতি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেলাই মেশিন কিনি। তারপর সমিতির দেওয়া ভাতার টাকা পাই নগদের মাধ্যমে। এখন সেলাইয়ের কাজ আর ভাতার টাকা দিয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে।’
ঠিক একইভাবে স্বামী আর সন্তানের জন্য সংসারের হাল ধরে নিজেদের ভাগ্য বদলেছেন মুন্সিগঞ্জের মিলি আক্তার। স্বামীর ছোট একটি কারখানার দেখাশোনা করেন তিনি। পাশাপাশি একমাত্র মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া ও তার দেখাশোনাও করেন নিজে। মিলি আক্তার বলছিলেন, ‘স্বামীর অল্প আয়ের কারণে সংসারে সংকট চলছিল। ঠিক সে সময়ে তিনি পাশে পান নগদকে। কারণ মেয়ের উপবৃত্তির টাকা পান নগদে। এই টাকায় মেয়ের পড়ালেখার খরচ হয়ে যায়, আর ছোট কারখানা থেকে চলে সংসারের খরচ।’
নগদের উপবৃত্তি ও সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বিতরণের বিষয়ে নগদ লিমিটেডের ডিএমডি ও সিসিও সিহাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে মানুষের সমঅধিকার নিয়ে কাজ করছি। যে কারণে নারী দিবসের জন্য না, সারা বছর জুড়ে লৈঙ্গিক সমতা আনতে কাজ করে নগদ। আমরা সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মূলধারার সাথে যুক্ত রাখতে কাজ করছি, যেটি সামনের দিনে আরো বেগবান হবে।’