এয়ার কন্ডিশনার আমাদের আধুনিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। তবে আমরা অনেকেই খেয়াল করি না যে, এসি চালু থাকাকালীন যে পানি বের হয় তা এক মূল্যবান সম্পদ হতে পারে।
এই পানি মূলত বাতাসের আর্দ্রতা থেকে ঘনীভূত হয়ে তৈরি হয়, যাকে কনডেনসেট ওয়াটার বলা হয়। এ পানি একেবারেই পরিষ্কার, তবে পানযোগ্য নয়। চলুন জেনে নেই এই পানি কী কী কাজে ব্যবহার করা যায়।
১. গাছপালায় পানি দেওয়া
এসি থেকে বের হওয়া পানি গাছের জন্য নিরাপদ, কারণ এতে ক্লোরিন বা অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে না। ব্যালকনি বা ছাদবাগানের গাছগুলোতে সহজেই এই পানি ব্যবহার করা যায়। তবে ট্যাঙ্কে জমিয়ে রাখার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার পাত্র ব্যবহার করা উচিত।
২. গাড়ি পরিষ্কারে
গাড়ি ধোয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির দরকার হয় না। এসির পানি ব্যবহার করে সহজেই গাড়ির বাইরের অংশ পরিষ্কার করা যায়। এতে পানি অপচয়ও কমে।
৩. টয়লেট ফ্লাশে
প্রতিদিন অসংখ্য বার টয়লেট ফ্লাশে প্রচুর পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয়। এসির পানি জমিয়ে রেখে টয়লেট ফ্লাশে ব্যবহার করলে পানি বাঁচানো সম্ভব।
৪. ঘর মোছার কাজে
ফ্লোর পরিষ্কার বা ঘর মোছার সময় এসির পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে জলের অপচয় কমে এবং কাজও ভালোভাবে হয়। তবে মাঝে মাঝে পানিতে জীবাণুনাশক মিশিয়ে নেওয়া ভালো।
৫. কাপড় ধোয়ার প্রাক-পর্বে
কাপড় ধোয়ার আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখা বা প্রথম ধাপের ধোয়ার কাজে এসির পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে নরম পানি ব্যবহারে কাপড়ও সহজে পরিষ্কার হয়।
৬. ব্যাটারিতে (যেমন ইনভার্টার বা গাড়ির ব্যাটারি)
অনেকেই ব্যাটারিতে সাধারণ কলের পানি ব্যবহার করেন, যা ক্ষতি করতে পারে। তবে এসির পানি খনিজমুক্ত হওয়ায় এটি ব্যাটারির জন্য উপযোগী। অবশ্যই আগে ছেঁকে বা পরিষ্কার পাত্রে রাখার পর ব্যবহার করা উচিত।
৭. ইস্ত্রির পানি হিসেবে
যারা স্টিম ইস্ত্রি ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এসির পানি উপযুক্ত। কারণ এতে খনিজ পদার্থ না থাকায় আয়রন মেশিনে জমে থাকা স্কেল কমে যায়।
সতর্কতা
>> এসির পানি সাধারণত পরিষ্কার হলেও ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে, তাই দীর্ঘদিন জমিয়ে না রাখা উত্তম।
>> পানীয় হিসেবে বা রান্নার কাজে ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত।
>> সংরক্ষণ ও ব্যবহারের সময় পাত্র পরিষ্কার রাখা জরুরি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া