অনলাইনের জগতে হ্যাকারদের তৎপরতা সব জায়গায়। কখন কে কীভাবে হ্যাকারের ফাঁদে পড়ে যাবেন বোঝাই মুশকিল। ডিভাইস ব্যবহারকারীদের আতঙ্কের নাম এই হ্যাকাররা। যাদের জন্য কোনো তথ্য, অর্থ সুরক্ষিত রাখার উপায় নেই।
স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় অনেক বিজ্ঞাপন সামনে আসে। এসব বিজ্ঞাপন বেশিরভাগ সময় এড়িয়ে গেলেও অনেক বিজ্ঞাপনেই আগ্রহের বশে ক্লিক করেন। এই এক ক্লিকেই অনেকের সর্বনাশ হয়ে যায়। ফিশিং লিঙ্কের মাধ্যমে বা ভয়া বিজ্ঞাপন দেখিয়ে লিঙ্কে ঢুকতে আগ্রহী করে হ্যাকাররা। তারপরও যা হওয়ার তাই হয়।
এসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ফোনের অ্যাক্সেস চলে যায় হ্যাকারের হাতে। তবে শুধু ব্যবহারকারী নয়, যেসব ব্যবসায়ীরা অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেন তারাও হ্যাকারের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্লিক ফ্রড’।
ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে ক্লিক বাড়ানোর জন্য বট বা ক্লিক ফার্ম ব্যবহার করে প্রতারকরা। বিজ্ঞাপনদাতারা যদি প্রতি ক্লিকের জন্য টাকা দেয় তাহলে প্রতারকরা তাদের সাইটে ট্র্যাফিক বাড়িয়ে দেয়। এখন ধরা যাক, কোনো ব্যবসায়ী একাধিক ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিলেন। প্রতি ক্লিক পিছু তিনি টাকা দেবেন। এই সময় আসরে নামে সাইবার অপরাধীরা। তারা ক্লিকের বন্যা বইয়ে দেয়। টাকা দিতে দিতে ব্যবসায়ীর পুঁজি শেষ হওয়ার পথে।
বিজ্ঞাপনের খরচ এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে, প্রতিযোগিরা ব্যবসা করতেই না পারে। আরেক রকম ভাবেও এরা কাজ করে। সেটা হলো ক্ষতিকারক লিঙ্কের সঙ্গে জাল ওয়েবসাইট তৈরি। যাতে ইউজারের কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার ডাউনলোড হয়ে যায়।
কীভাবে বাঁচবেন ক্লিক ফ্রড থেকে?
গুগল বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীকে কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়, যে উপায়ে আপনি ক্লিক ফ্রড থেকে বাঁচতে পারবেন। ক্লিক ফ্রড থেকে বাঁচতে অনলাইন টুল রয়েছে। এগুলো ফ্রড ক্লিক শনাক্ত করে ব্লক করে দেয়। পাশাপাশি ক্লিক প্যাটার্নও বিশ্লেষণ করতে পারে এই টুলগুলো। সেটা হলো, বিজ্ঞাপনদাতা চাইলে নির্দিষ্ট কিছু আইপি অ্যাড্রেস ব্লক করে দিতে পারেন। অর্থাৎ তারা বিজ্ঞাপন দেখতে পাবে না।
ট্র্যাকিং কনভার্সনের মাধ্যমেও বৈধ ক্লিক এবং ফ্রড ক্লিকের পার্থক্য করা যায়। প্রতিটা ক্লিকের তুল্যমূল্য বিচার করে এই টুল। ফলে অসঙ্গতি সহজেই ধরা পড়ে যায়। ক্রমাগত বিজ্ঞাপনের মেট্রিক্স পর্যালোচনা করে যেতে হয়। এভাবেও ক্লিক ফ্রড ধরা যায় সহজেই। তবে এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ।
বট ফিল্টার করতে ল্যান্ডিং পেজে ক্যাপচা ব্যবহার করা যায়। তাহলে প্রকৃত ইউজাররাই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতে পারবে। ক্লিক ফ্রড সম্পর্কে সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দৈনন্দিন জীবনেও এর প্রভাব পড়ছে। অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর সফটওয়্যার আপডেট করাও গুরুত্বপূর্ণ।