ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে নিষিদ্ধ সশস্ত্র বামপন্থি সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি-মাওবাদীর (সিপিআই-এম) সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশভা রাও ওরফে বাসভরাজসহ ২৭ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার (২১ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই তথ্য নিশ্চিত করে একে ‘যুগান্তকারী সাফল্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অমিত শাহ বলেন, গত তিন দশকে এই প্রথমবার সিপিআই-্এমের একজন সাধারণ সম্পাদককে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে আমাদের বাহিনী। তিনি অভিযানে অংশ নেওয়া নিরাপত্তা কর্মীদের সাহসিকতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেন।
এই অভিযান চালানো হয় মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার অবুজমাড়ের গভীর জঙ্গলে। নিহত বাসভরাজ তেলেঙ্গানার বাসিন্দা এবং ২০১৮ সালে মাওবাদী সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন। তিনি আগে দলের সামরিক শাখার নেতৃত্ব দিতেন এবং একাধিক হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন, যেগুলোতে বহু নিরাপত্তা সদস্য প্রাণ হারান।
নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, এই অভিযানের মাধ্যমে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়েছে। অভিযানের পাশাপাশি ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রে ৫৪ জন নকশালকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও ৮৪ জন আত্মসমর্পণ করেছেন।
সম্প্রতি ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ নামের ২১ দিনের একটি অভিযানে মাওবাদীদের সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়, যা এই সাফল্যের পটভূমি তৈরি করে। এই অভিযানে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বাহিনী একযোগে কাজ করেছে।
অমিত শাহ আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সিপিআই-মাওবাদীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। আজকের অভিযানের সাফল্য সেই লক্ষ্যে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ছত্তিশগড়ের গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৫০ বছর ধরে মাওবাদীদের প্রভাব ছিল। বাসভরাজের মৃত্যুর মাধ্যমে সেই অধ্যায়ের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। মাওবাদীদের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা ও সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিজয়।
সূত্র: দ্য প্রিন্ট, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস