পেহেলগামে হামলার পর ভারত তার অপারেশন সিঁদুর চালানোর পরও দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কারণ, গত কয়েক মাসে রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট ও পাঞ্জাব থেকে অন্তত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন প্রকৌশলী রয়েছেন, যিনি ফেসবুকের মাধ্যমে পাক গুপ্তচরদের ফাঁদে পেয়ে নৌবাহিনীর সংবেদনশীল তথ্য পাচার করতেন। অন্য একজন হরিয়ানা থেকে ট্রাভেল ব্লগার, যাকে সশস্ত্রদের পাহারায় লাহোরের মার্কেটে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া রাজস্থানের একজন সরকারি কর্মকর্তা সাতবার পাকিস্তানে সফর করেছেন কোনো কারণ ছাড়া। একজন সিমকার্ড সরবরাহকারীও রয়েছেন। ভারত সরকার দাবি করছে, এই সবাই পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এর কাছে গোপন তথ্য পাচার করছিল।
তাঁরা কারা?
মতি রাম জাট: মতি রাম জাট ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সে (সিআরপিএফ) কর্মরত ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের সঙ্গে ২০২৩ সাল থেকে যোগাযোগ রাখতেন এবং অর্থের বিনিময়ে তথ্য দিতেন। সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড ধরা পড়ায় দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। এরপর সিআরপিএফ থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে।
রবীন্দ্র ভার্মা: মুম্বাইয়ের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৭ বছর বয়সী প্রকৌশলী রবীন্দ্র ভার্মা মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) গ্রেপ্তার করেছে। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানের এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তিনি সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজের স্পর্শকাতর তথ্য ছবি অঙ্কন করে পাচার করতেন। ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ।
জ্যোতি মালহোত্রা: হরিয়ানার বাসিন্দা এই ট্রাভেল ব্লগারের একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। তাকে আইএসআইয়ের এজেন্ট সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, মালহোত্রা পাকিস্তানের হাইকমিশনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছে এবং পাকিস্তান সফর করেছে। তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ডেটা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
শাহদেব সিং গোহিল: ২৮ বছর বয়সী স্বাস্থ্য কর্মী গুজরাট থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি ভারতীয় সেনা ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানে পাচার করতেন।
এ ছাড়া হরিয়ানার আরও কয়েকজন বাসিন্দাকেও অর্থের বিনিময়ে পাকিস্তানের কাছে স্পর্শকাতর তথ্য শেয়ার করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা পেশার মানুষ অর্থ ও প্রলোভনের বিনিময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছে। ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের ধরা পড়ার পরও সতর্ক রয়েছে যেন এরকম ঘটনা বন্ধ করা যায়।
সূত্র: এনডিটিভি