ইরান ইসরায়েলের উদ্দেশে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’ ছুড়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইরানের দাবি—এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সফলভাবে প্রবেশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, নতুন করে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে এবং হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ইরানেই নির্মিত।তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত এই হামলার সত্যতা স্বীকার করেনি।
এদিকে সিএনএনের খবরে উঠে এসেছে, ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) জানিয়েছে, তারা 'সেজ্জিল-২' নামের কঠিন জ্বালানির মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ট্রু প্রমিজ-৩ অভিযানের অংশ হিসেবে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলমান ইসরায়েল-ইরান পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই এ পরিস্থিতির উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এর আগে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানিয়েছিল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। তারা জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে এবং জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।অন্যদিকে, আইডিএফ দাবি করেছে, তারা তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইরানের আইআরজিসি জানিয়েছে, তেহরানের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি শহরতলীর কিছু অংশে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।বিবিসি জানায়, ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো উত্তর-পূর্ব তেহরানে বড় বিস্ফোরণের শব্দ এবং ধোঁয়ার খবর দিচ্ছে। লাভিজান এলাকাসহ তেহরান এবং পার্শ্ববর্তী কারাজ শহরের বিভিন্ন এলাকাও হামলার আওতায় পড়েছে বলে তাবনাক নিউজ জানায়।আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় তেহরান রিসার্চ সেন্টার ও কারাজের টিইএসএ কারখানাসহ দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ তৈরি করে থাকে এবং আগে আইএইএর তত্ত্বাবধানে ছিল।
এছাড়া ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যম। বিশ্ববিদ্যালয়টি আইআরজিসির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধরা হয়।
হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস নামের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সংগঠন দাবি করেছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩২৬ জন আহত হয়েছেন। সংগঠনটি জানায়, নিহতদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
তবে ইরান সরকারের সর্বশেষ সোমবার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ২২৪ এবং আহত ১ হাজার ২৭৭ জন। এরপর থেকে নতুন করে কোনো সরকারি হতাহতের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।