এবার রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের ইতি টানতে চীনের সহায়তা চাইলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলেনস্কি তার দেশে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সাহায্য করার জন্য বেইজিংকে আহ্বান জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জেলেনস্কি বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ করার অনুরোধ করে আসছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে এখনও কোনো কথা হয়নি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি সরাসরি কথা বলতে চাই। এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার কথা বলেছি। কিন্তু সেটা এখনও সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, এই আগ্রাসন থামাতে চীনের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন বলে আমার বিশ্বাস।
ইউক্রেনে রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে অভিহিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অপরদিকে বিশ্বজুড়ে এই আগ্রাসনের নিন্দা জানানো হলেও ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার সমালোচনা থেকে দূরে রয়েছে চীন।
প্রায় ছয় মাস ধরে চলা এই যুদ্ধ-সংঘাতে ইউক্রেনে কমপক্ষে ৫ হাজার ৩২৭ বেসামরিক নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই যুদ্ধের কারণে ‘বিশ্বের রুটির ঝুড়ি’ হিসেবে পরিচিত ইউক্রেন থেকে বিভিন্ন ধরনের শস্য অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মূল্য আশঙ্কার চেয়েও অনেক বেড়ে গেছে।
ইউক্রেন এবং এর পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো রাশিয়ার এই আক্রমণকে আগ্রাসন বলে অভিহিত করলেও বেইজিং বলছে, ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণের কারণেই মস্কো এই আক্রমণে প্ররোচিত হয়েছে।
এদিকে গত জুনে এক শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শি জিনপিং। তিনি বলেছিলেন যে, এটি ‘মানবতার জন্য বিপজ্জনক’। তবে কীভাবে যুদ্ধ শেষ করা যায় সে বিষয়ে তিনি কোনো ইঙ্গিত দেননি।
এছাড়া চলতি মাসের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলেন জিনপিং। পুতিনকে সেরা বন্ধু বলে উল্লেখ করে তিনি রাশিয়ার ‘সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা’র জন্য চীনের সমর্থনের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেন। শি জিনপিং বলেন, সব পক্ষকে দায়িত্বশীলভাবে ইউক্রেন সংকটের সঠিক নিষ্পত্তির জন্য চাপ দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে চীন যথাযথ ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।