
মস্কোতে প্রায় ‘ব্যর্থ’ বৈঠকের পরদিন বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। হোয়াইট হাউজ জানায়, মায়ামিতে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে কিয়েভের পক্ষ থেকে যোগ দেবেন তাদের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান রুস্তেম উমেরভ।
এর আগে বুধবার জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠক কয়েক দিনের মধ্যেই হবে। এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পৃথিবী স্পষ্টভাবে অনুভব করছে যে যুদ্ধ শেষ করার বাস্তব সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তবে তিনি যোগ করেন, আলোচনা অবশ্যই রাশিয়ার ওপর চাপ বজায় রেখে হতে হবে।
বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা করেন উইটকফ। তার সঙ্গে ওই আলোচনায় যোগ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার। বৈঠক শেষে ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে ওই আলোচনায় কোনও "সমঝোতা" হয়নি।
আলোচনা পুরোপুরি সফল হয়নি, তা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, বৈঠক “মোটামুটি ভালো” ছিল। তবে ফল কী হবে তা এখনই বলা যায় না, কারণ এ ধরনের বিষয়ে দু’পক্ষের সম্মতি লাগে।
এদিকে, রাশিয়াকে অবিলম্বে রক্তপাত বন্ধের দাবি জানিয়ে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, পুতিন পুরো বিশ্বের সময় নষ্ট করছেন।
বৈঠকে উইটকফ ও কুশনারের উপলব্ধি নিয়ে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, যুদ্ধ অবসানে পুতিনের সদিচ্ছা তারা দেখেছেন কিনা। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, (পুতিন) যুদ্ধ শেষ করতে চান। তাদের এমনটাই মনে হয়েছে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ দফা প্রস্তাব নিয়ে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে অন্তত দুটি বড় মতপার্থক্য রয়ে গেছে—রুশ বাহিনীর দখলে থাকা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ব্যবস্থা।
ইউক্রেন ও তাদের ইউরোপীয় অংশীদারদের বিশ্বাস, শান্তিচুক্তি হলেও ভবিষ্যতে রাশিয়াকে ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হবে ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ দেওয়া।
রাশিয়া এ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে এবং ট্রাম্পও বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি ইউক্রেনকে জোটে নেওয়ার পক্ষপাতী নন।
ক্রেমলিন বুধবার বলেছে, ন্যাটোতে ইউক্রেনের সম্ভাব্য সদস্যপদ ছিল মস্কো বৈঠকের একটি প্রধান প্রশ্ন। তবে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে “যতবার প্রয়োজন” আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
রুশ-মার্কিন সম্পর্ক যেখানে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, সেখানে মস্কো ও ইউরোপের দূরত্ব আরও বাড়ছে। পুতিন অভিযোগ করেছেন, ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া সম্পর্ক নষ্ট করছে। তারা এমন সব দাবি উত্থাপন করছে যেগুলোতে মস্কোর আপত্তি থাকবে এবং শান্তি প্রক্রিয়া আটকে যাবে।
উইটকফ ও কুশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের ঠিক আগে মস্কোর একটি ফোরামে পুতিন বলেন, তিনি ইউরোপের সঙ্গে সংঘাত চান না, তবে তিনি “যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।”
সূত্র: রয়টার্স