
কেবিন ক্রু সঙ্কট ও প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ নানা কারণে টানা তিন ধরে শিডিউল নিয়ে বিপাকে থাকা ইনডিগো এয়ারলাইন কেবল একদিনেই সাড়ে পাঁচশর বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
২০ বছর বয়সী এয়ারলাইনটির জন্য এটি একটি রেকর্ড, বলছে এনডিটিভি।
ইনডিগো জানিয়েছে, আগামী দুই তিনদিন আরও ফ্লাইট বাতিল হবে।
এয়ারলাইনটি প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার ৩০০ ফ্লাইট চালায়, নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণে এর সুনামও ছিল। বুধবার তাদের নির্ধারিত সময়ে উড্ডয়ন অবতরণের হার ছিল ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। আগেরদিনও এটা ছিল ৩৫ শতাংশ।
সঙ্কট মোকাবেলা ও সমাধান বের করতে বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) ইনডিগোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
ইনডিগোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন, অপারেশন স্বাভাবিক করতে ও সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনাটা ‘সহজ নিশানা’ নয়।
বৃহস্পতিবার মুম্বাই বিমানবন্দরে অন্তত ১১৮টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, ব্যাঙ্গালোরে ১০০টি, হায়দরাবাদে ৭৫, কলকাতায় ৩৫, চেন্নাইতে ২৬ ও গোয়াতে ১১টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। অন্যান্য বিমানবন্দরেও ফ্লাইট বাতিলের খবর পাওয়া গেছে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাইলট ও ক্রুদের কাজের সময় নিয়ে বেশ কিছু নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এসব নির্দেশনায় পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের সময় দেওয়া, রাত জেগে ফ্লাইট না চালানো, সময়মতো ফ্লাইট চালাতে রোস্টার ঠিকঠাক রাখা, পর্যাপ্ত ক্রু না থাকলে ফ্লাইট বাতিল করার নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এসব নির্দেশনার সঙ্গে মানিয়ে ক্রু ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ইনডিগো কর্তৃপক্ষকে। শীতকালীন আবহাওয়া, প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং আরও কিছু বিষয়ের কারণে ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন আরও বেড়েছে।
ইনডিগোর ফ্লাইট বাতিল, শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে। কোনো কোনো যাত্রীদের লাগেজ পেতে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষারত যাত্রীদের কোনো খাবার বা পানি না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ফ্লাইট কতক্ষণ দেরি হবে, কখন ছাড়বে তা নিয়ে বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ বিমানবন্দরেই ইনডিগোর কর্মীরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, যাত্রীদের কাছ থেকে বারবার সময় নিয়েও ফ্লাইট ছাড়তে পারেনি তারা।
“আমি এখানে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। প্রত্যেকবার তারা বলে এক ঘণ্টা দেরি হচ্ছে, দুই ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। আমরা একটি বিয়েতে যাচ্ছি, আমরা এমনকী আমাদের লাগেজও পাচ্ছি না। ইনডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছুই বলছে না। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বাজে এয়ারলাইন্স। আমি বুঝছি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে, আর লাগেজ জড়ো করেই যাচ্ছে,” ক্ষুব্ধ এক যাত্রী এমনটাই বলেছেন এনডিটিভিকে।
পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ইনডিগো বলেছে, বিপর্যয় এড়াতে তারা সোমবার থেকে ফ্লাইট সংখ্যাও কমিয়ে দিচ্ছে।