পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও রাজনৈতিক দল। বরং জঙ্গি সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইমরান খান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুই জনই নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে কী ঘটতে পারে দেশটিতে? রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চারটি চিত্র:
জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন নওয়াজ শরিফ
পার্লামেন্টে মাত্র ৭৫টি আসন পেয়েছে নওয়াজের দল পিএমএল-এন। ফলে জোট সরকার গঠন করতে ভুট্টোর দল পিপিপির সাথে এক চুক্তি করেছে তারা। অন্য ছোট দলগুলোকেও তাদের সাথে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর, এই জোটই সরকার গঠন করে, যেখানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর শেহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
অন্য দলে যোগ দিতে হবে স্বতন্ত্রদের
নির্বাচনে ইমরান খানের দল-পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন মোট ১০১ আসন। তবে সরকার গঠন করতে হলে তাদেরকে আগে কোনও একটা দলে যোগ দিতে হবে। তাহলেই তার সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পাবে। আর তারপর, অন্য কোন দলকে সাথে নিয়ে জোট গঠন করতে হবে।
ইমরান খান যেহেতু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নন। তাই যদি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্য দলে যোগ দেওয়ার চুক্তি করে, তখন তারা কারাবন্দি ইমরানকে মুক্ত করতে চাপ দিতে পারবে।
পিপিপি ছাড়া জোট অসম্ভব
পিএমএল-এন ও পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররা বেশি আসন পেলেও, কোন দলই পিপিপি ছাড়া জোট সরকার গঠন করতে পারবে না। এটাই হল পিপিপির তুরুপের তাস। তাই সমর্থনের জন্য বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছেন তার বাবা আসিফ আলি জারদারি।
পাকিস্তানের জন্য নতুন তরুণ নেতৃত্ব প্রয়োজন উল্লেখ করে, ভোটের আগেই এমন প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।
সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ
শেষ পর্যন্ত যদি কোন দলই সরকার গঠন করতে না পারে, তাহলে ক্ষমতার দখল নিতে পারে সেনাবাহিনী। এমনিতেই পাকিস্তানে শক্তিশালী সেনাবাহিনী। রাজনীতিতে তাদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানের ৭৬ বছরের ইতিহাসে তিনবার ক্ষমতার দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। সবশেষ ১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরিফকে উৎখাত করে, ক্ষমতার দখল নেয় তারা। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভেদকে ভুলে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান।