
পকেট গরম থাকলেই এখন থেকে মিলবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ। দেশটিতে চালু হয়েছে ধনী বিদেশিদের জন্য ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’ নামের দ্রুত ভিসা স্কিম, যার মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ ডলার।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ট্রাম্প বলেন, আমাদের মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো অসাধারণ মেধাবীদের এখন থেকে সহজেই ধরে রাখতে পারবে। কারণ এই কার্ড কেবল যোগ্য এবং যাচাইকৃত ব্যক্তিদেরই নাগরিকত্বের সুযোগ দেবে।
চলতি বছর প্রথম এই কার্ডের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। স্কিমের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ট্রাম্প গোল্ড কার্ড এক ধরনের মার্কিন ভিসা, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারার সক্ষমতা প্রমাণ করলে দেওয়া হবে। ১০ লাখ ডলার ফি প্রদানের বিনিময়ে এই স্কিম দ্রুততম সময়ে মার্কিন মুলুকে স্থায়ী আবাস গড়ার সুযোগ দেবে।
এছাড়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে চার্জসহ দিতে হবে ২০ লাখ ডলার। আর বিশেষ কর সুবিধা সম্বলিত আরেকটি স্কিল প্লাটিনাম কার্ডও আসতে যাচ্ছে, যার মূল্য হবে ৫০ লাখ ডলার।
প্রতিটি আবেদনকারীর পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে অতিরিক্ত সরকারি ফি প্রযোজ্য হতে পারে। আবেদন পর্যালোচনার আগেই ১৫ হাজার ডলার অফেরতযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ ফি দিতে হবে।
এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন ওয়াশিংটন কঠোর অভিবাসন দমন নীতি জোরদার করছে—এর মধ্যে রয়েছে কর্মভিসার ফি বৃদ্ধি এবং অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো।
ফেব্রুয়ারিতে স্কিমটির কথা ঘোষণার পর থেকেই সমালোচনা চলছে। কিছু ডেমোক্র্যাট বলছেন, এটি ধনীদের অন্যায় সুবিধা দেবে।
তবে সে সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, এই ভিসাগুলো গ্রিন কার্ডের মতো—যা বিভিন্ন আয়ের মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বাস ও কাজ করার সুযোগ দেয়। সাধারণত গ্রিন কার্ডধারীরা পাঁচ বছর পর নাগরিকত্বের জন্য যোগ্য হন।
কিন্তু গোল্ড কার্ড মূলত “উচ্চস্তরের” পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে ট্রাম্প জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের দরকার কর্মক্ষম মানুষ।
প্লাটিনাম কার্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা ৫০ লাখ ডলার দিতে পারে, তারা চাকরি তৈরি করবে। এটা দেদারসে বিক্রি হবে।
অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসী বহিষ্কারে ব্যাপক ব্যয় করছে।
এরইমধ্যে, ১৯টি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং অভিবাসন আবেদন স্থগিতাদেশ জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, বাইডেন প্রশাসনের সময় অনুমোদিত হাজারো আবেদন পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে।
এরআগে, সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের ওপর এক লাখ ডলার ফি আরোপের আদেশে স্বাক্ষর করেন। সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশি শিক্ষার্থী এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে হোয়াইট হাউজ জানায়, ফি কেবল নতুন আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য—যারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আছেন। সূত্র : বিবিসি