মার্কিন নির্বাচনে লাভবান হবে ভারত!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ১৪:৪১
কমলা হ্যারিসের নামে চেন্নাইয়ের থুলাসেনধ্রাপুরাম গ্রামে চলছে মিষ্টি বিতরণ

এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে যাচ্ছেন কমলা হ্যারিস। এদিকে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিংমেট জেডি ভ্যান্সের স্ত্রী ঊষা চিলুকুরি ভান্স। এই দুইজনই ভারতীয় বংশোদ্ভূত।ফলে ভারতের সাধারণ মানুষ মনে করছেন, মার্কিন নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা উপকৃত হবেন। আসলেই কি তাই? শুক্রবার (২৬ জুলাই) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য।
জানা গেছে, ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই শহর থেকে তিনশো কিলোমিটার দূরের একটি ছোট্ট গ্রাম থুলাসেনধ্রাপুরাম। এই গ্রামেই নানার বাড়ি হ্যারিসের। তার মায়ের নাম শ্যামালা গোপালান। তারা পেইনগানাডু ভেঙ্কটারমন গোপালন ও নানি রাজাম গোপালান। ১৯৫৮ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে, অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ডাক পান শ্যামলা। তখন থেকে সেখানেই থিতু হন শ্যামলা। কমলা হ্যারিসের বাবা ডোনাল্ড জে হ্যারিস জ্যামাইকান আমেরিকান।

এদিকে উষা চিলুকুরির বাবা-মা ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী এবং কৃষ্ণা জেলার বাসিন্দা। বিয়ের পরপরই ১৯৮০ এর দশকে উষার বাবা লাকস্মি চিলুকুরি ও মা রাধাকৃষ্ণা চিলুকুরি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তারা। তার বাবা ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আর মা বায়োলজিস্ট।ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোয় জন্ম ও বড় হয়েছেন ঊষা। এমনকি উষার দাদা চিলুকুরি রমা শাস্ত্রী আইআইটি মাদ্রাজে পদার্থবিদ্যা পড়াতেন।তার বেশিরভাগ আত্মীয় স্বজন এখনও চেন্নাইয়ে বসবাস করেন।
ট্রাম্পের রানিংমেট জেডি ভান্সের স্ত্রী উষা চিলুকুরি ভান্সের দাদা ও নানার বাড়ি ভারতে। ছবি: ওয়েবসাইট।
যদিও ভারতীয়রা তাদের সাফল্যে গর্বিত, তারপরও কমলা বা উষা তাদের জন্মস্থানে খুব কমই যান। আর এই সম্পর্ক দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন,মার্কিন নির্বাচনে যে দলই জিতুক না কেন, তাদের শিকড় যাই হোক না কেন, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে তার প্রভাব খুবই কম।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, দুজনেই ভারতকে অনুকূলে চেয়েছিলে, শুধু এই অঞ্চলে চীনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য নয় বরং নয়াদিল্লিকে রাশিয়ার অস্ত্রের ওপর ঐতিহ্যগত নির্ভরতা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যও।
৫৯ বছর বয়সী কমলা ২৫ বছর বয়সে শেষবার তার নানাবাড়িতে গিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার পর সেই গ্রামে মিষ্টি বিতরণসহ, পূজা আর্চনা সবই চলছে কমলার নামে। এমনকি তেলেঙ্গনায় তার মায়ের নামে স্কুলও তৈরি হয়েছে -শ্যামলা এডুকেশন সোসাইটি। সম্প্রতি তেলঙ্গনায় উদ্বোধন হয়ে গেল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই প্রতিষ্ঠানের।
তারপরও ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকেও এই সম্পর্ক রাজনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। ভারত কোনওভাবেই এই সম্পর্ক দ্বারা উপকৃত বা প্রভাবিত হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।