ইউক্রেন যুদ্ধে পরস্পর বিরোধী অবস্থান থাকার পরেও মস্কো ও ওয়াশিংটনের যোগাযোগের চ্যানেল খোলা থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এই তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
সুলিভান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। কিন্তু যাদের সঙ্গে দরবার করা হচ্ছে, সেটা কর্মকর্তারা ভালো করেই জানেন।
ইউক্রেনে যেন কোনো পারমাণবিক উত্তেজনা তৈরি না হয়, সেই জন্য জ্যাক সুলিভানের নেতৃত্বে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে, এরকম একটি খবর কয়েকদিন আগে ওয়াশিংটন জার্নালে প্রকাশিত হয়। সেই তথ্য অস্বীকার করেনি হোয়াইট হাউজ। তারই প্রেক্ষিতে সুলিভান এই বক্তব্য দিলেন।
ওই খবরে বলা হয়, রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি নিকোলাই পেত্রুশেভ আর ক্রেমলিনের জ্যেষ্ঠ বৈদেশিক নীতি বিষয়ক সহকারী ইউরি উশাকভের সঙ্গে গত কয়েকমাস ধরে গোপনে আলোচনা করছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কীভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক উত্তেজনা নিরসন করা যায়, তা নিয়ে এই কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি বিষয়ক কোন আলোচনায় তারা অংশ নেননি।
গত মাসেই সুলিভান বলেছিলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের কোনরকম ব্যবহার রাশিয়ার জন্য ‘মারাত্মক বিপর্যয়কর’ হবে।
এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন আলোচনার সময় মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, এ রকমটা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
ওই খবর নিশ্চিত করার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানিয়ে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেছিলেন, ‘মানুষ অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলে।’
আর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পশ্চিমা গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করে বলেছিলেন, ‘তারা অনেক প্রতারণামূলক’ সংবাদ প্রকাশ করছে। তবে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জেন-পিয়ের সোমবার বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার অধিকার আছে যুক্তরাষ্ট্রের।
ইউক্রেনে অবৈধভাবে সংযুক্ত করা চারটি অঞ্চল রক্ষায় রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের আশ্রয় নিতে পারে, গত কয়েক মাস ধরে এরকম একটি আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সংবাদে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে যাতে কিয়েভ খোলামেলা মনোভাব প্রকাশ করে, সেজন্য অনুরোধ করছে মার্কিন কর্মকর্তারা।
সেই সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে কোন আলোচনা হবে না বলে ইউক্রেন যে ঘোষণা দিয়ে আসছে, প্রকাশ্যে সেসব কথা না বলার জন্যও তারা চাপ দিচ্ছে।
কিন্তু সুলিভান বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জবাবদিহিতা আদায় করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাইডেন প্রশাসন। ইউক্রেন যুদ্ধে যেসব যুদ্ধাপরাধ ঘটেছে, হামলাকারীরা যা করেছে, সেই দায়ীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে তারা একত্রে কাজ করে যাবে।