একসঙ্গে ৯ তরুণীকে বিয়ে। এরপর সেই সম্পর্কের উদযাপনও করেন ঘটা করেই। তবে যে উৎসাহ নিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ফিকে হয়েছে। কারণ, শেষ পর্যন্ত ৯ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করা হয়নি তার। ইতোমধ্যে পাঁচজনই তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এ জন্য নতুন আরও সঙ্গীর খোঁজ করছেন তিনি। বলছিলাম, ব্রাজিলের মডেল আর্থার ও উরসোর কথা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ নিউজ জানিয়েছে, একসঙ্গে ৯ তরুণীকে বিয়ে করে ২০২১ সালে প্রথমবার শিরোনামে উঠে এসেছিলেন আর্থার। তবে বিয়ের কয়েক মাস পরেই এক স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। বহুগামী সম্পর্কে তিনি প্রথমে রাজি হয়েছিলেন। পরে তার মোহভঙ্গ হয়।
এরপর থেকে আট জন স্ত্রীকে নিয়েই ভালো কাটাচ্ছিলেন আর্থার। সবাইকে নিয়ে থাকার জন্য ব্রাজিলের জোঁ পেসোয়া শহরে প্রাসাদোপম একটি বাড়ি বানিয়েছেন তিনি। তবে সংসারে ফের নামে অশান্তির ছায়া।
সম্প্রতি আরও চার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে ফেলেছেন আর্থার। বহুগামী সম্পর্ক, দৈনন্দিন দিনযাপন সংক্রান্ত নানাবিধ বিষয়ে মতবিরোধ থাকায় উভয়পক্ষের সম্মতিতেই এই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
এই মডেল জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে আইনসম্মত তার স্ত্রী চার জন। তাদের নিয়ে ব্রাজিলের বিশাল বাড়িতে থাকেন তিনি। তবে আরও সঙ্গীর খোঁজ চলছে। নতুন নতুন সঙ্গী ছাড়া তিনি থাকতে পারেন না বলেই জানান ব্রাজিলীয় মডেল।
গত বছর থেকেই চর্চায় আর্থারের সংসার, সঙ্গী, বিবাহিত জীবন। কীভাবে আট জন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি সংসার করে চলেছেন, কীভাবে ভারসাম্য রেখে সবাইকে মানিয়ে চলেন, তা জানার জন্য উৎসাহীদের আগ্রহের অন্ত নেই।
এ বিষয়ে একাধিকবার একাধিক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আর্থার। তার বহুগামী জীবন নিয়ে যাবতীয় কৌতূহল নিরসন করেছেন। এই মডেল জানিয়েছেন, একাধিক স্ত্রীকে নিয়ে থাকা, সবার সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে সংসার করা আদতে এমন কিছু কঠিন নয়।
আর্থার জানিয়েছিলেন, সবার মন রাখতে একটি রুটিন তিনি বানিয়ে নিয়েছেন। কবে কখন কোন স্ত্রীর সঙ্গে ঠিক কতটা সময় তিনি কাটাতে চান, কোন সময় কী করতে চান, রুটিনে সে সব লেখা ছিল। সেই রুটিন অনুযায়ী দিন কাটান তিনি।
এমনকি ব্রাজিলীয় মডেল নিজের যৌন জীবনকেও বেঁধে ফেলেছেন রুটিনে। কোন স্ত্রীর সঙ্গে তিনি কখন মিলিত হবেন, তার রুটিন তৈরি করা রয়েছে। সেই রুটিন অনুযায়ী চলে নিত্য যৌনমিলন।
আট স্ত্রীকে নিয়ে থাকবেন বলেই সাধ করে বাড়ি তৈরি করেছিলেন আর্থার। কেন বিচ্ছেদ হলো? এ প্রসঙ্গে আর্থার জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম বহুগামী জীবন শুরু করার পর তাকে নানা কথা শুনতে হতো। তাকে এবং তার স্ত্রীদের নিয়ে অনেকেই ঠাট্টা করতেন। যা শুনে তাদের মন খারাপ হয়ে যেত।
সমাজের এই টিপ্পনী, হাসাহাসির মাঝে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে উঠেছিলেন ৩৬ বছর বয়সী এই মডেল। স্ত্রীদের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে আলোচনায় বসেন। কথাবার্তার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করে নিয়েছিলেন নিজেরাই।
এমন আলোচনার মাধ্যমেই চার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর্থার। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো অশান্তি হয়নি। শান্তিতেই আমরা সম্পর্ক শেষ করেছি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে আমরা নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছি। মুক্ত ভালোবাসার সম্পর্ক তো এমনই হওয়া উচিত।’
বহুগামী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার নেপথ্যে কোন কৌশল লুকিয়ে রয়েছে? আর্থার জানান, প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করা প্রয়োজন। সেটাই সবথেকে বেশি দরকারি। তার দর্শন, ‘আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সম্মান করি। একে অপরের চাহিদা বুঝি। আমরা তাই বুঝে নিয়েছি। কখন শেষ করা দরকার।’
চার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর আবার কি বিয়ে করার কথা ভাবছেন আর্থার? বারবার তাকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রতিবার জবাবে একটি বিষয় স্পষ্ট ছিল। তিনি এক জনকে নিয়ে থাকতে পারেন না। তার একাধিক সঙ্গী প্রয়োজন।
আর্থার জানান, তিনি আরও নতুন সঙ্গীর খোঁজে রয়েছেন। আবার বিয়ে করবেন কি না, এখনো সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তবে বিয়ে না করলেও সঙ্গী তার প্রয়োজন।
শুধুমাত্র বহুগামী সম্পর্কের কারণেই নয়, সঙ্গী খোঁজার অন্য কারণও রয়েছে। আর্থার জানান, তার বিশাল বাড়িটি এখন খাঁ খাঁ করে। বিবাহবিচ্ছেদের পর খালি খালি লাগে। সেই কারণেও নতুন সঙ্গিনীদের খোঁজ করছেন তিনি। এই মডেল চান, আবার তার রুটিন সচল হয়ে উঠুক। আবার স্ত্রীদের হাসি-ঠাট্টায় গমগম করে উঠুক গোটা বাড়ি।