প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন দমন অভিযানের অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনীকে সীমান্তের নির্দিষ্ট এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
১১ এপ্রিল শুক্রবার রাতে স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপিতে ট্রাম্প এই নির্দেশ দেন। ‘"মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত সিল করে অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে সামরিক অভিযান" শিরোনামের ওই স্মারকলিপি স্বরাষ্ট্র সচিব ডগ বার্গাম, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোয়েম এবং কৃষি সচিব ব্রুক রলিন্সকে প্রেরণ করা হয়েছে।
নির্দেশনা স্মারকে বলা হয়েছে, “আমাদের দক্ষিণ সীমান্ত এখন নানা ধরনের হুমকির মুখে। পরিস্থিতির জটিলতা বিবেচনায় আমাদের সামরিক বাহিনীকে সীমান্ত রক্ষায় পূর্বের তুলনায় আরও সরাসরি ভূমিকা পালন করতে হবে।”
এই স্মারকলিপিতে প্রতিরক্ষা বিভাগকে 'রুজভেল্ট রিজার্ভেশনসহ বিভিন্ন ফেডারেল জমির নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রুজভেল্ট রিজার্ভেশন হলো মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর ৬০ ফুট প্রশস্ত একটি ফেডারেল জমির অংশ, যা ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং নিউ মেক্সিকোর ওপর দিয়ে বিস্তৃত। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনী সেসব এলাকায় ‘অনধিকার প্রবেশকারী’ অভিবাসীদের আটক করার আইনি অধিকার পাবে এবং পরবর্তীতে তাদের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ফেডারেল জমিতে সেনাবাহিনীর কাজের মধ্যে থাকবে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, নজরদারির যন্ত্রপাতি স্থাপন ও সীমান্ত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা। এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার ৪৫ দিনের মাথায় প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন পেশ করবেন। তবে প্রয়োজনে হেগসেথ এই সময়সীমা ও জমির পরিধি আরও বাড়াতে পারবেন। এই সামরিক দখলের আওতায় দেশীয় আদিবাসী সংরক্ষিত ভূমি বা ‘নেটিভ রিজার্ভেশন’-গুলো থাকবে না**, স্মারকলিপিতে এমনটাই বলা হয়েছে। নির্দেশটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি জোরদারের সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপ। এর আগে তিনি দক্ষিণ সীমান্তে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছিলেন।
এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার এক মার্কিন ফেডারেল বিচারক রায় দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিদের ফেডারেল সরকারের কাছে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বৈধ। যদিও আইনটি ১৯৪০-এর দশকে প্রণীত হলেও এতদিন তা সবার জন্য সমভাবে কার্যকর হয়নি।
২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) এই ঘোষণা দেয়। যারা নিবন্ধনে ব্যর্থ হবেন, তারা জরিমানা বা কারাদণ্ডের মুখে পড়তে পারেন বলেও সতর্ক করা হয়।
সমালোচকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আসলে Posse Comitatus Act–এর সীমাবদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল। এ আইন অনুযায়ী, মার্কিন সামরিক বাহিনী সাধারণত নাগরিক আইন প্রয়োগে অংশ নিতে পারে না।
ট্রাম্প ও তাঁর রিপাবলিকান সহযোগীরা দাবি করেন, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী অভিবাসীরাই যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল প্রবাহের মূল উৎস। অবশ্য সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মাদক পাচারের দায়ে দণ্ডিত ৯০ শতাংশ ব্যক্তিই মার্কিন নাগরিক।