ভারতে আইফোন তৈরির কারখানায় আগুন, চীনের দ্বারস্থ হতে পারে অ্যাপল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৩০

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভারতের তামিলনাড়ুতে অবস্থিত টাটা ইলেক্ট্রনিক্সের ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকান্ড ঘটে ।ভারতের তামিলনাড়ুতে অবস্থিত টাটা ইলেক্ট্রনিক্সের ফ্যাক্টরিতে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অগ্নিকান্ড ঘটে। এ ঘটনার পরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওই কারখানায় পণ্য উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই বিপাকে পড়ে বিখ্যাত মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল।
অ্যাপল বিপদে পড়েছে কারণ, কারণ টাটার এই প্ল্যান্টেই তৈরি হতো আইফোনের বেশ কিছু কম্পোনেন্ট। এর মধ্যে কিছু কম্পোনেন্ট তৈরি হয় চুক্তিভিত্তিক সরবরাহকারী ফক্সকনের জন্য ও কিছু টাটার নিজস্ব আইফোন অ্যাসেম্বলির জন্য।
উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আসন্ন দুর্গাপূজাসহ নান উৎসব সামনে রেখে সরবরাহ ঠিক রাখতে বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে এখন অ্যাপলকে। শোনা যাচ্ছে, সরবরাহ ঠিক রাখতে চীনের দ্বারস্থ হতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।
ভারতে অক্টোবর-নভেম্বরের উৎসবের সিজনে আইফোনের মতো প্রিমিয়াম পণ্যের চাহিদা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পায়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ঠিক রাখতে তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য মজুদও রাখতে হয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
সম্প্রতি আইফোন ১৬ সিরিজ উন্মোচিত হলেও আসন্ন উৎসবের সিজনে ভারতের বাজারে আইফোন ১৪ ও ১৫ সিরিজের সরবরাহ নিয়েই বিপাকে পড়তে পারে অ্যাপল। কেননা টাটার হোসুর প্ল্যান্টে আইফোন ১৪ ও ১৫ সিরিজের কম্পোনেন্টই মূলত তৈরি হয়।
জানা যায়, উৎসবের সময়ে (অক্টোবর-নভেম্বর) ভারতের বাজারে আইফোন ১৪ ও ১৫ সিরিজের ১৫ লাখ মোবাইল ফোন বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এই চাহিদার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের সরবরাহ নির্ভর করে টাটার হোসুর ফ্যাক্টরির উপর।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘাটতি পূরণে চীনের মতো বিকল্প উৎস থেকে ভারতে কম্পোনেন্ট নিয়ে এসে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, টাটার অ্যাসেম্বলিতে তৈরি আইফোন ভারতের বাজারে বিক্রির পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্রতেও বিক্রি করা হয়। গত অর্থ বছরে টাটার তৈরি ২৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের আইফোন রপ্তানি করা হয় ভারত থেকে। এমনকি চীনের কয়েকটি অঞ্চলেও রপ্তানি করা হয়েছে টাটার প্ল্যান্টে তৈরি আইফোন।
অ্যাপল পণ্যের সরবরাহকারীরা সাধারণত তিন থেকে চার সপ্তাহের প্রয়োজনীয় ব্যাক প্যানেল নিজেদের কাছে মজুদ রাখে বলে কাউন্টারপয়েন্ট জানিয়েছে। তবে অ্যাপলের প্রকিউরমেন্ট কৌশল সম্পর্কে ধারণা রাখে এমন একটি সোর্সের মতে, অ্যাপল খুব সম্ভবত এখন আট সপ্তাহের মজুদ রাখে। ফলে অগ্নিকান্ডের ঘটায় উৎপাদন ব্যহত হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব অচিরেই সরবরাহ ব্যবস্থার উপর পড়বে না।
তবে হোসুর প্ল্যান্টে উৎপাদন দীর্ঘদিন স্থগিত থাকলে অ্যাপলের সামনে বিকল্প খোঁজা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। সেক্ষেত্রে চীনে নতুন একটি অ্যাসেম্বলি লাইন স্থাপন করে বা অতিরিক্ত শিফটে কাজ করিয়ে ভারতের বাজারে বিদ্যমান চাহিদা পূরণ করতে হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইফোন তৈরিতে চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমানো এবং সার্বিকভাবে চীনের বাইরে নিজেদের সরবরাহ কাঠামোকে (সাপ্লাই চেইনকে) সুসংহত করার লক্ষ্যে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিকল্প ভেবেই এগিয়েছে অ্যাপল।
এবারে ভারতের টাটা প্ল্যান্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় চীনের বিকল্প খোঁজার পরিকল্পনা কিছুটা হলেও যে ব্যহত হয়েছে সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।