লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ তাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা হাসান সাফিয়েদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ইসরায়েলি বিমান হামলার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র।
সাফিয়েদ্দিন হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাকে সম্প্রতি নিহত হাসান নাসরাল্লার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল।
আল জাজিরা জানিয়েছে, সাফিয়েদ্দিন হিজবুল্লাহর একজন অতি গোপনীয় নেতা হিসেবে পরিচিত। অনেকেই বিশ্বাস করতেন, তিনি নাসরাল্লার স্থলাভিষিক্ত হবেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে বৈরুতের দাহিয়েহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলার পর থেকে তার কোনো খবর না পাওয়ায় হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম দপ্তর অবশ্য এ ধরনের খবরকে গুজব অভিহিত করে জানিয়েছে, সংগঠনের কোনো কর্মকর্তার ভাগ্য নিয়ে এ ধরনের প্রতিবেদন ‘গুরুত্বহীন’। কেবল তাদের গণমাধ্যম দপ্তরের দেওয়া বিবৃতিই গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সাফিয়েদ্দিনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি তারা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাফিয়েদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া হিজবুল্লাহর ভেতরে একটি বড় ধরনের গোয়েন্দা অনুপ্রবেশের ইঙ্গিত দেয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেন, এটি ইসরায়েলকে একের পর এক নেতাকে চিহ্নিত করে হামলা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলামী রাজনীতি বিশেষজ্ঞ নাদের হাসেমি বলেন, সাফিয়েদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবরটি হয়তো তাকে মৃত ঘোষণার আগে হিজবুল্লাহ সমর্থকদের প্রস্তুত করার একটি প্রচেষ্টা হতে পারে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি শুক্রবার জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী এখনো বৈরুতের ওই এলাকায় বিমান হামলার পরিণতি মূল্যায়ন করছে, যেখানে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তর ছিল।
ইসরায়েল সম্প্রতি লেবাননের দক্ষিণে সীমিত স্থল অভিযান শুরু করেছে, পাশাপশি বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরসহ বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা জোরদার করেছে। ইসরায়েলি হামলার ভয়ে বহু বেসামরিক লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে এরই মধ্যে দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১২ লাখ।