সত্যি বলতে নিজেকেই এখনো চিনি না। হয়তো হবে না চেনা।/ বৃষ্টি তো দূরের দ্বীপ, মনোমেঘে তার কোনো আত্মীয়তা নেই।
বৃষ্টি দূরতমা
কথা ছিল বৃষ্টি হবে, বৃষ্টি তো হলো না।
এই দুঃখ মনোভার নবীনা দুঃখিনী মেঘ
হয়ে কেন থম ধরে থাকে। উড়তে জানে তারপরও
নিশ্চল গোমড়া মুখে ঠায় সে দাঁড়ানো। এ যে দেখছি
বড়ো জ্বালা। অবাঞ্ছিত জটিল উৎপাত। কী যে করি
ছাইপাশ, মাথায় খেলে না কিছু। যদি পাই হাতের নাগালে
বৃষ্টিকে বকুনি দেব। আচ্ছা করে ধমকে দেবো ঠিক।
হয়তো বৃষ্টি টের পেয়ে গেছে। গুটিয়ে সে নিয়েছে নিজেকে।
বৃষ্টি কী শামুক? হবেও বা। আমি তার কতটুকু চিনি?
সত্যি বলতে নিজেকেই এখনো চিনি না। হয়তো হবে না চেনা।
বৃষ্টি তো দূরের দ্বীপ, মনোমেঘে তার কোনো আত্মীয়তা নেই।
তাড়িয়ে ফিরি মৃত্যু-মাছি
যেমন বাজাও তেমনি বাজি
বাজতে বাজতে
প্রায়ান্ধকার বিষাদ সুতোয়
ইচ্ছেসকল
বাঁধতে বাঁধতে
একটি জীবন খরচা হলো
নষ্ট এবং ভ্রষ্ট হলো
কীট কামড়ে দষ্ট হলো
তারপরেও সাধ মেটে না
আকাঙ্ক্ষা হয় একটু দাঁড়াই
মৃত্যু-মাছির দুঃখ তাড়াই
তাড়িয়ে ফেরা হারিয়ে পাওয়া
পাওয়ার পরেই হারিয়ে ফেলা
এমনিতরো গোলকধাঁধায়
ঘূর্ণি নাচন নাচতে গিয়ে
হারিয়ে গেছে চলচ্ছক্তি
জীবন এখন কুঁকড়ে ব্যথায়
ধুঁকতে ধুঁকতে গোঙানি সার
দেখছি না আর...
আছেই আছে
অমরতার গুপ্ত চাবি কোনখানে সে লুকিয়ে আছে
মন চলে তার সঞ্চালনায়
শোধরাতে চায় কলঙ্ক পাপ
চুপটি করে চায় সে যেতে
সন্নিধানে তাহার কাছে
স্বপ্ন তবে ধরছে গাছে?
গাছ যেমনি ভাগ্যলেখার
গন্দম সেই ফলটি উহার
গাছকে আমি
গাছকে তুমি
স্পর্শ করে ফেলবো পাছে
এমনিতরো সম্ভাবনার
আশঙ্কা তো আছেই আছে
তাই ভুলেও যাই না কাছে
যাই না কাছে দূরেই থাকি
নিঃসঙ্গ মূক আর একাকী...
দগ্ধ দুরাশায়
স্বপ্ন এক লতাগুল্ম
স্বপ্ন এক হ্রেষাধ্বনি
সামলেসুমলে রাখতে ওকে
পারছি না, ভেঙে পড়ছি
ক্ষয়ে যাচ্ছি
নুয়ে যাচ্ছি
এত উচ্চ এত বেশি গুরুভার
জানা যদি থাকতো আগে
ভাঙা এই নৌকায়
চড়বার দুরাশা হতো না!
দুরাশা এখন দগ্ধ
পরিণত হয়েছে সে অফলা জমিনে
আরো ক্লান্তি
আরো ক্ষুব্ধ মনোভার
আকীর্ণ করেছে দেখি, আমি এই বন্দিত্বের
মর্ম ছেনে ভালো কিছু
উদ্ভাবনে একান্তই অপারগ
নির্বান্ধব এবং নাচার...
জয় পরাজয়
হারজিত হয়নি কারো
দু’জনেই জিতে গেছে
একইসঙ্গে হেরেছে দু’জনা।
এই খেলা খেলবার
প্রয়োজন ছিল না আদৌ।
যেহেতু করেছো শুরু,
শেষ অব্দি দেখতে হবে
অনিচ্ছা যতই হোক তীক্ষ্ণ ও প্রবল
দেখে দেখে অভ্যন্তরে
জখম হওয়াই শিল্প
দগ্ধ ও আহত ক্ষুণ্ণ বিধ্বস্ত হওয়াই
অনিবার্য পরিণতি
এবং নিয়তি...
এসো না ভুলেও
সর্বনাশ কী পোষা পাখি?
যৎসামান্য দানাপানি পেলেই সে
বর্তে যাবে
বাঁধা বুলি ছলকে উঠবে
তার কণ্ঠে,
নয় নয়, এমত কিছুর কোনো সম্ভাবনা নেই।
সর্বনাশ মুক্ত পাখি
সম্মোহন ক্ষমতাও চমৎকার ওর
ডেকে নেয় চুপিসারে
তারপর? টিপে ধরে টুঁটি
হৃৎপিণ্ডের ওঠাপড়া দ্রুত লয়ে
রক্তচাপ উথাল-পাথাল!
সর্বাঙ্গে বিষণ্ণ ঘাম
চোখ লাল
ব্রহ্মতালু উচ্ছন্নে বেদিশা
সর্বনাশ, শতবার চাইলে
ভালোবাসতে পারি না তোমাকে
সর্বনাশ, তুমি যাও দূরান্তর
কাছে পিঠে সন্নিকটে
তুমি আর ভুলেও এসো না,
লক্ষীটি দোহাই!
এ জীবন ধন্য করো
চিন্তার ঘূর্ণন থেকে
বিজুলি চমক থেকে
উৎপন্ন হয়েছো তুমি
আলোর ডানায় তুমি ভর করে
এসে গেছো আমাদের নশ্বর উঠানে।
আশ্চর্য অতিথি তুমি
নারায়ণ..
পৃথিবীর সমস্ত ফুলের স্তব
সুগন্ধের অহমিকা
তোমার, তোমারই জন্যে
হে শব্দ তাপস তুমি
হে কবিতা
আগ্নেয় আবেগ তুমি
হে মিউজ হে আরাধ্যা
ধন্য করো কবির জীবন...