অজু করে মোটা চামড়ার বা কাপড়ের মোজা পরিধান করলে মুসাফির এক দিন পর্যন্ত ও মুকিম অর্থাৎ নিজের এলাকায় অবস্থানরত ব্যক্তি এক দিন পর্যন্ত অজুর সময় পা না ধুয়ে ওই মোজার ওপর মাসাহ করতে পারেন। শীত বা এ রকম অসুবিধার কারণে অজুর সময় পা ধোয়ার পরিবর্তে মোজার ওপর মাসাহ করার অনুমতি রয়েছে। শর্ত হলো, অজু করে পরিধান করার পর থেকে এ সময়ের মধ্যে তিনি মোজা খোলা যাবে না। মোজা খোলা হলে আর মাসাহ করার অনুমতি থাকবে না।
অজু ভঙ্গ হওয়ার কোনো কারণ ঘটলে মাসাহও ভেঙে যায়। এ ছাড়া মোজা খুললে মাসাহ ভেঙে যায়। পায়ের টাকনুসহ বেশির ভাগ অংশ মোজা থেকে বের হয়ে গেলে মাসাহ ভেঙে যায়। উভয় মোজার কোনো একটিতে বেশির ভাগ অংশে পানি পৌঁছে গেলেও মাসাহ ভেঙে যায়।
ওজু করার পর মোজা পরিধান করলে পরবর্তীতে ওজু নষ্ট হয়ে গেলে তার ওপর মাসাহ করা যাবে। অজু না থাকা অবস্থায় মোজা পরিধান করলে পরবর্তীতে অজুর সময় মাসাহ করা যাবে না।
মোজা পরিধান করার পর গোসল ফরজ হয়ে গেলে গোসল করার সময় মোজা খুলতে হবে, ফরজ গোসলে মোজার ওপর মাসাহ করলে গোসল হবে না।
সব ধরনের মোজার ওপর মাসাহ জায়েজ নয়। চামড়ার মোজার উপর মাসাহ জায়েজ। সুতা বা পশমের মোজায় নিম্নোক্ত শর্তগুলো পাওয়া গেলে তার ওপর মাসাহ জায়েজ। শর্তগুলো হলো:
১. মোজা এমন মোটা ও পুরু হওয়া যে, জুতা ছাড়া শুধু মোজা পায়ে দিয়ে তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়। এতে মোজা ফেটে যায় না এবং নষ্টও হয় না।
২. পায়ের সাথে কোনো জিনিস দিয়ে বাঁধা ছাড়াই তা লেগে থাকে এবং তা পরিধান করে হাঁটা যায়।
৩. মোজা এমন মোটা যে, তা পানি চোষে না এবং তা ভেদ করে পানি পা পর্যন্ত পৌঁছে না।
৪. মোজাটি পরিধান করার পর মোজার ওপর থেকে ভেতরের অংশ দেখা যায় না।
আমাদের দেশে প্রচলিত সুতার মোজা, নাইলনের মোজা বা উলের মোজার ওপর মাসাহ জায়েজ হবে না। কারণ এ মোজাগুলোতে উপরোক্ত শর্তগুলো পাওয়া যায় না। এগুলোতে পানি পড়লে পানি খুব সহজেই মোজা ভেদ করে পায়ে পৌঁছে যায়। জুতো ছাড়া শুধু এসব মোজা পরিধান করে দীর্ঘ পথ হাঁটাও সম্ভব নয়।