বিতর অর্থ বিজোড়। বিতর নামাজের রাকাত বিজোড় সংখ্যক বিধায় এটিকে বিতর নামাজ বলা হয়। ইশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত বিতর পড়া যায়। প্রতিদিন এ সময়ের মধ্যে বিতর নামাজ পড়া ওয়াজিব। বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, বিতরের নামাজ আবশ্যক বা ওয়াজিব তাই যে ব্যক্তি বিতরের নামাজ আদায় করল না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪১৯)
বিতর নামাজে অন্যান্য নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়তে হয়। তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত পড়ার পরপর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধতে হয় এবং দোয়া কুনুত পড়তে হয়। তারপর অন্যান্য নামাজের মতো রুকু, কাওমা, সিজদা করে শেষ বৈঠকে বসতে হয় এবং তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে বিতর নামাজ শেষ করতে হয়।
কেউ যদি বিতর নামাজে কত রাকাত পড়েছেন সে ব্যাপারে সন্দেহে পড়ে যান, দ্বিতীয় রাকাত না তৃতীয় রাকাত পড়ছেন তা মনে করতে না পারেন তাহলে তিনি ওই রাকাতে দোয়া কুনুত পড়বেন, তারপর রুকু সিজদার পর বৈঠক করবেন, বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পড়ে আরও একটি রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন এবং ওই রাকাতেও দোয়া কুনুত পড়বেন। অর্থাৎ শেষ দুই রাকাতেই তিনি দোয়া কুনুত পড়বেন। নামাজ শেষে সাহু সিজদা করবেন।
উচ্চারণ ও অর্থসহ দোয়া কুনুত
اللّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِيْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ، اللّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّيْ وَنَسْجُدُ، وَإِلَيْكَ نَسْعٰى وَنَحْفِدُ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰى عَذَابَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর; ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা; ওয়া নাখলাঊ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফঝুরুকা; আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু; ওয়া লাকা নুসাল্লি ওয়া নাসঝুদু; ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু; নারঝু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক্ব।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনার সাহায্য প্রার্থনা করি, আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আপনার প্রতি ঈমান রাখি এবং আপনার ওপর ভরসা করি, আপনার উত্তম প্রশংসা করি, আপনার শোকর আদায় করি, আপনার প্রতি অকৃতজ্ঞ হই না, যারা আপনার নাফরমানি করে, তাদেরকে পরিত্যাগ করি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা আপনারই ইবাদাত করি, আপনার জন্যই নামাজ পড়ি এবং আপনার জন্যই সিজদা করি, আপনার দিকেই ধাবিত হই, আপনার হুকুম পালনের জন্যই প্রস্তুত থাকি, আপনার দয়ার আশা করি, আপনার শাস্তিকে ভয় পাই। নিঃসন্দেহে আপনার শাস্তি ভোগ করবে কাফির সম্প্রদায়।