সুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত। আবার অসুস্থতার মাধ্যমে মুমিনদের পাপ মোচন হয়। সুস্থতার জন্য আল্লাহর দরবারে যেমন দোয়া করা উচিত তেমনি অসুস্থ হলেও তা থেকে পানাহ পাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা উচিত।
মহান আল্লাহ মানুষকে যেমন সুস্থ রাখেন, তেমনি রোগও দেন। আর এ থেকে পরিত্রাণ পেতে রোগ থেকে মুক্তির দোয়াও শিখিয়ে দিয়েছেন। অনেক সময় পরীক্ষা নেওয়ার জন্যও আল্লাহ রোগব্যাধি, বালা-মুসিবত দিয়ে থাকেন; যাতে আমরা আল্লাহকে ভুলে না যাই। আর বিপদে-আপদে আমরা আল্লাহকে কতটুকু মনে রাখি- সেটাও আল্লাহ দেখেন। রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া, দোয়া করা উচিত। কোরআন মাজিদে রোগমুক্তির জন্য বর্ণিত আয়াতে শিফার মাধ্যমে আমরা রোগব্যাধি থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারি।
হাদিসে আছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-কে দেখতে গিয়ে তিনবার দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি সাদকে সুস্থ করে দিন।’ - সহিহ বোখারি : ৫৬৫৯
সেই সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলোরও আমল করতে পারি। হাদিসে বর্ণিত একটি দোয়া হলো-
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি মুজহিবাল বাসি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা শাফিয়া ইল্লা আনতা শিফায়ান- লা ইয়ুগাদিরু সাকামা।
অর্থ : হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী; আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ অবশিষ্ট না থাকে।
হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়-ফুঁক করতেন।- সহিহ বোখারি : ৫৭৪২
অন্য হাদিসে আরও ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) রোগী দেখে সাতবার এই দোয়া পাঠ করতেন-
উচ্চারণ: ‘আসয়ালুল্লাহাল আজিম, রাব্বাল আরশিল আজিমি আই-ইয়াশফিয়াকা।’
অর্থ: আমি মহান আল্লাহর কাছে- যিনি মহা আরশের প্রতিপালক তোমার সুস্থতা কামনা করছি।’ - সুনানে তিরমিজি : ২০৮৩
সুস্থতা ও অসুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। এ অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপও হতে পারে। মুমিনের জন্য তার গোনাহর কাফফারাও হতে পারে।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সত্যের নিকটবর্তী থাকো এবং সরল-সোজা পথ অবলম্বন করো। মুমিনের যে কষ্টই হোক না কেন, এমনকি তার গায়ে যদি কোনো কাঁটা বিঁধে বা সে কোনো বিপদে পতিত হয়- সবকিছুই তার গোনাহের কাফফারা হয়।’ - তিরমিজি : ৩০৩৮
অসুস্থতাকে অশুভ নিদর্শন হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ যার মঙ্গল চান তাকে দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।’- সহিহ বোখারি : ৫৬৪৫