যে বয়স পর্যন্ত দুধ পান করালে দুধের সম্পর্ক হয়

ধর্ম ডেস্ক
  ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৮

শিশুকে দুধপান করাতে হয় তার বয়স পূর্ণ দুই চন্দ্রবছর বা বিশ দিন কম পূর্ণ দুই সৌরবছর অর্থাৎ ৭১০ দিন হওয়া পর্যন্ত। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, মায়েরা সন্তানদের পূর্ণ দুবছর দুধ পান করাবে, যারা দুধ পান করাবার সময় পূর্ণ করতে চায়। আর বাবার কর্তব্য বিধি মোতাবেক তাদের খাবার ও পোশাক প্রদান করা। কোনো ব্যক্তিকে সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয় না। কোন মাকে বা বাবাকে সন্তানের জন্য কষ্ট দেওয়া যাবে না। ওয়ারিশের ওপরও রয়েছে অনুরূপ দায়িত্ব। তারপর তারা যদি পরস্পর সম্মতি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুধ ছাড়াতে চায়, তাহলে তাদের কোনো পাপ হবে না। আর যদি তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে অন্য কারো থেকে দুধ পান করাতে চাও, তাহলেও তোমাদের কোনো পাপ নেই, যদি তোমরা বিধি মোতাবেক তাদেরকে যা দেওয়ার তা দিয়ে দাও। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা পত্যক্ষ করেন। (সুরা বাকারা: ২৩৩)
কোনো শিশুকে এই বয়সে অর্থাৎ তার বয়স ৭১০ দিন হওয়ার আগে যদি তার মা ছাড়া অন্য কোনো নারী তাকে স্তন্যদান করে, তাহলে সে ওই শিশুর দুধ মা গণ্য হয়। ইসলামি শরিয়তে দুধের সম্পর্কের কারণে মাহরামের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যেমন ওই নারী, তার স্বামী, তার গর্ভের সন্তান, তার দুধ সন্তান দুধ পানকারী শিশুর মাহরাম হয়ে যায়।
কোনো শিশুর আপন মা যদি তাকে দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেয়, শিশু অন্য খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যায়, এরপরও দুই চন্দ্র বছরের ভেতর কোনো নারীর দুধ পান করলে তার সাথে শিশুর দুধের সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে, শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের বুকের দুধে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ ও রোগের প্রতিষেধক রয়েছে যা তার সুস্থতা ও বৃদ্ধিতে সহায়ক। কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর প্রসঙ্গ এসেছে। নবি মুসার (আ) ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি মুসার মায়ের অন্তরে নির্দেশ দিলাম, তাকে দুধ পান করাও।’ (সুরা কাসাস: ৭)

শিশুর জন্য দুধপানের গুরুত্ব বিবেচনা করে ইসলামি শরিয়তে স্তন্যদানকারী মায়েদের রমজানের ফরজ রোজা রাখার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। রোজা রাখার কারণে শিশু দুধ না পেলে মায়েরা তখন রোজা ভেঙে পরবর্তীতে কাজা করতে পারেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ মুসাফিরের ওপর থেকে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের অর্ধেক রহিত করে দিয়েছেন এবং মুসাফির, স্তন্যদানকারিণী ও গর্ভবতী নারীদের থেকে রমজানের রোজা পালন করার বাধ্যবাধকতাও শিথিল করে দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি, সুনানে আবু দাউদ)