নামাজের ভেতরের ছয়টি ফরজ কাজ অর্থাৎ তাকবিরে তাহরিমা, কিয়াম, কেরাত, রুকু, সিজদা, শেষ বৈঠক ভুল করে বা ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে নামাজ হবে না। ওই নামাজ আবার নতুন করে পড়তে হবে। নামাজের কোনো ফরজ ভুল করে বা ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিলে সাহু সিজদা দিলেও ওই নামাজ শুদ্ধ হবে না।
নামাজে কেউ যদি ভুলে কোনো ওয়াজিব ছেড়ে দেয়, তাহলে সংশোধনস্বরূপ নামাজ শেষে সাহু সিজদা করতে হয়। ভুলে ওয়াজিব ছেড়ে দিলে সাহু সিজদা করা ওয়াজিব। কোনো মুসল্লি যদি সিজদা সাহু করতেও ভুলে যায়, তাহলে ওই নামাজের ওয়াক্ত বাকি থাকা অবস্থায় মনে পড়লে ওই নামাজ পুনরায় পড়ে নেওয়া ওয়াজিব হবে। ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর মনে পড়লে পুনরায় ওই নামাজ পড়া ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব।
আর যদি কেউ নামাজে ইচ্ছাকৃত কোনো ওয়াজিব ছেড়ে দেয়, তাহলে ওয়াক্ত চলে যাওয়ার আগে ওই নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব। পুনরায় আদায় না করলেও ত্রুটিযুক্ত অবস্থায় তার নামাজ হয়ে যাবে তবে সে গুণাহগার হবে।
নামাজের ওয়াজিব ১৪টি, যথা:
১. প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়া।
২. প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহার পর সুরা মিলনো (কমপক্ষে তিন আয়াত অথবা তিন আয়াতের সমকক্ষ এক আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা)।
৩. ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতকে কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা।
৪. কিরাআত, রুকু, সিজদার মধ্যে ক্রমধারা বা তারতিব ঠিক রাখা।
৫. কাওমা করা অর্থাৎ রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
৬. জলসা করা অর্থাৎ দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
৭. তাদিলে আরকান করা অর্থাৎ রুকু, সিজদা, কাওমা, জলসায় কমপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ স্থির থাকা।
৮. কাদায়ে উলা অর্থাৎ তিন বা চার রাকাআত বিশিষ্ট নামাজে দুই রাকাত পর বৈঠক করা।
৯. প্রথম ও শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া।
১০. ফজর, মাগরিব ও ইশার প্রথম দুই রাকাতে ইমামের জন্য উচ্চৈস্বরে কেরাত পড়া এবং জোহর ও আসরে ইমাম ও একাকি নামাজির অনুচ্চ শব্দে কেরাত পড়া।
১১. সালাম ফেরানো। অর্থাৎ ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে নামাজ শেষ করা।
১২. বেতরের নামাজের দোয়ায়ে কুনুত পড়ার জন্য অতিরিক্ত তাকবির বলা এবং দোয়ায়ে কুনুত পড়া।
১৩. দুই ঈদের নামাজে ছয় তাকবির বলা।
১৪. প্রত্যেক রাকাতের ফরজ এবং ওয়াজিবগুলোর তারতিব (ধারাবাহিকতা) ঠিক রাখা।