বিএনপি-জামায়াতসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা টানা তিন দিনে সড়ক অবরোধের প্রভাব পড়েছে দেশের পর্যটন শিল্পে। টানা অবরোধে পর্যটকশুন্য হয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন খাতকে অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকদিন আগেও পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত থাকলেও খাগড়াছড়ির অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিল ছাড়াও রিছাং ঝরনা, জেলা পরিষদ পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।
মঙ্গলবার বিকালে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। শীতের শুরুতে পাহাড়ী কন্যা খাগড়াছড়ি পর্যটকে মুখরিত থাকলেও এবার চিত্র ভিন্ন। বাতিল হয়ে যাচ্ছে হোটেল ও কটেজের আগাম বুকিং।
খাগড়াছড়ির অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, ‘মাত্র শীত মৌসুম শুরু। এ সময় পর্যটন কেন্দ্রে প্রচুর দর্শনার্থীতে সরব থাকে।’
‘যেখানে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ পর্যটক ভ্রমণ করে, সেখানে টানা অবরোধে চিত্র বদলে গেছে। পর্যটক নেই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বো।’
আলুটিলা কফি হাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মেহেদি হাসান হৃদয় বলেন, অবরোধের কারণে আমাদের রেস্টুরেন্ট ক্রেতা নেই।
এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়বে। অবরোধ বন্ধ হবে ও পর্যটন ব্যবসা সচল হবে। এমনটাই প্রত্যাশা করেন এ ব্যবসায়ীরা।
টানা অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশের বাস চলাচল বন্ধ ছিল বিগত কয়েকদিন। ফলে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা অনেক পর্যটক ভোগান্তিতে পড়েছেন। ঢাকায় ফেরার বাস না পেয়ে আটকা পড়েছেন অনেকেই।
ঢাকা থেকে আসা শিক্ষার্থী সোহাগ বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে ২৯ অক্টোবর সাজেকে বেড়াতে এসেছি। এখন ফেরার বাস পাচ্ছি না। বাসের টিকেট করলেও কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে গাড়ি ছাড়বে না। এখন বিকল্প উপায়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ইমরান বলেন, ‘অবরোধ ঘোষণার আগেই সাজেকে এসেছি। সাজেকে থেকে খাগড়াছড়িতে ফিরলেও ঢাকায় যেতে পারছিনা।’
খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, ‘ভরা মৌসুমে পর্যটক না থাকায় হতাশ পর্যটন ব্যবসায়ীরা।’
‘রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘ হলে পর্যটন শিল্প আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি পর্যটননির্ভর জেলা।’
‘এখানকার অনেকেই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটন খাতকে রাজনৈতিক কর্মসূচীর বাইরে রাখার দাবী জানান তিনি।’