টিকিট ছাড়া প্লেনে ওঠা জুনায়েদের আরও এক স্বপ্ন পূরণ

গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৪০

পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট এবং বোর্ডিং পাস ছাড়াই সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠা জুনায়েদের বাড়ির সামনের খাল পারাপারের জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের নির্দেশনায় মাকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমাম রাজী টুলু সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। গতকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের ইমরান মোল্লার ছেলে জুনায়েদ। সম্প্রতি তার বাড়ির সামনের খাল পারাপারের জন্য কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গতকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) এই সেতু তৈরির কাজটি শেষ হয়। নতুন সেতু পাওয়ায় জুনায়েদের পাশাপাশি গ্রামবাসীরাও অনেক খুশি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেড় মাস আগে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গণশুনানিতে অংশ নিয়েছিল জুনায়েদ। ওই শুনানিতে স্থানীয় মানুষদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন জেলা প্রশাসক। সেখানে নিজের পাইলট হওয়ার ইচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বাড়ির সামনের বাঁশের সাঁকোর বদলে মানুষের যাতায়াতের জন্য একটি কাঠের সেতু তৈরি করে দিতে আহ্বান জানায় সে। পরে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম জুনায়েদের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণে তাকে গোপালগঞ্জ শিশু পরিবারে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। একই সঙ্গে তার বাড়ির সামনে কাঠের সেতু তৈরি করার আশ্বাস দেন। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমাম রাজী টুলু বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে নতুন কাঠের সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। গতকাল সেতুটি তৈরির কাজ শেষ হয়।
কাঠের সেতু তৈরি করে দেওয়ায় জুনায়েদের সঙ্গে খুশি স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে খাল পারাপারের যে সমস্যা ছিল, তা থেকে রেহাই পেয়ে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সবাই।
সেতু নির্মাণ করায় জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমকে ধন্যবাদ জানিয়ে জুনায়েদ বলে, ‘সেতু হওয়ায় আমি খুবই খুশি। এলাকায় সবাই আমাকে এখন খুব ভালো বলছে।’
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন বলেন, পাইলট হওয়ার ইচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বাড়ির সামনের বাঁশের সাঁকোর বদলে কাঠের সেতু তৈরি করে দেওয়া কথা জানায় জুনায়েদ। তার স্বপ্ন পূরণের জন্য বাড়ির সামনে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওঠে জুনায়েদ। রাত সোয়া ৩টার দিকে ওই ফ্লাইট উড্ডয়নের কথা ছিল। এর আগে প্রায় ঘণ্টাখানেক ওই ফ্লাইটের সিটে বসে ছিল জুনায়েদ। পরে এক যাত্রী তাকে অন্য সিটে বসতে বললে ধরা পড়ে জুনায়েদ পাসপোর্ট, টিকিট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে উঠেছে। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ শিশুটিকে আটক করে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ জুনায়েদকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।