মধ্যযুগের একজন গণিতবিদ লিখে গেছেন, যখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হলো, তখন চারদিক রাতের থেকেও বেশি অন্ধকার হয়ে গেলো, আকাশ থেকে উড়ন্ত পাখিরা ভয়ে মাটিতে ঝরে পড়া শুরু করলো। তিনি ১৫৬০ সালে পর্তুগালে দেখা সূর্যগ্রহণের বিবরণ এভাবে লিখে গেছেন।
যদিও সেটা সত্য কি না এখন অনেক বিজ্ঞানীর মনেই সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে পশুপাখি নানান ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়। যেমন রাত হয়ে গেছে ভেবে অনেক পাখি নীড়ে ফিরে যায়, পরিযায়ী পাখিরা আকাশে উড়ে যায়এবং আবার সূর্য দেখা দিলে তারা নতুন দিন শুরু করে। ঝিঁঝি পোকা, ব্যাঙ সন্ধ্যার সুরে ডেকে উঠে। জিরাফ দৌড়ানো শুরু করে। ফ্ল্যামিংগো কাছাকাছি জড়ো হয়। প্রায় সব প্রাণীই সতর্ক এবং কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তবে গ্যালাপোগাস দ্বীপের কচ্ছপগুলো আরও একধাপ এগিয়ে। এই সময় বংশবৃদ্ধির জন্যে তারা পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়।
কোনও একটি নির্দিষ্ট স্থানে পূর্ণ সূর্য গ্রহণ বিরল ঘটনা। একবার যে জায়গায় পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হয়েছে, সেখানে আরেকবার পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হতে চার শ' বছরের বেশি সময় লাগবে। তবে মানুষ ততদিন অপেক্ষা না করে নিজেরাই চলে যায় যে জায়গায় পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হচ্ছে, সেখানে। যেমন এবারের আমেরিকায় কয়েক মিলিয়ন মানুষ গাড়ি নিয়ে, প্লেনে, ট্রেনে, যে যেভাবে পারে ছুটছে পূর্ণ সূর্য গ্রহণ দেখতে। অনেকে ছয় মাস, এক বছর আগে এসব ব্যবস্থা করে রেখেছে। এটি হতে চলেছে আগামীকাল। রাস্তায় অসম্ভব জ্যাম হবে। সতর্কবাণী চারদিকে। বহু স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। এমন কি জরুরি অবস্থায় ঘোষণা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে।
আমি মাত্র ক'দিন আগে ব্যবস্থা করলাম। যাচ্ছি, পেনসিলভানিয়ার ইরিতে। হুট্ করে পরিকল্পনা। ওদিকে আশরাফ ভাই ছ' মাস আগেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আমার মতো সকালে গিয়ে বিকালে ফিরে আসা নয়, তিন দিনের জন্যে যাচ্ছেন। করারই কথা, তিনি লেখক এবং নিজেও বিজ্ঞানী।
শুক্রবার অফিসে এক্লিপ্সের কথা উঠতেই আমি একটু গর্ব করে বলতে গেলাম যে, এটা দেখতে বিমানে করে যাচ্ছি পিটসবার্গ, তারপর ড্রাইভ করে ইরি। তখন আমার কলিগ টিম আব্দেল্লা জানালো, সে চার চারটি শহরে যাওয়ার জন্যে বহু আগেই প্লেনের টিকেট কেটে রেখেছে। রিফান্ডেবল টিকেট, কাজেই সূর্যগ্রহনের আগের দিন সে তিনটা টিকেট ক্যানসেল করে হয় টেক্সাস নয়তো, নর্থ ক্যারোলিনা, নয়তো ইন্ডিয়ানা, নয়তো নিউইয়র্কের বাফেলোতে যাবে। আমি মিইয়ে গেলাম। সায়েন্স ফিকশন লেখক হিসাবে তাহলে আমার পাঁচটা টিকেটই তো তাহলে কাটা উচিত ছিল!
বিজ্ঞান লেখক ডেভিড ব্যারন বলেছেন, জীবনে একবার অন্ততঃ পূর্ণ সূর্যগ্রহন দেখা উচিত। এ অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। আমরা সূর্যের দিকে তাকাই না। আমরা সব কিছু দেখি, সবদিকে তাকাই, কিন্তু সহজাত প্রবৃত্তিতে সূর্যের দিকে সরাসরি দেখি না, একেবারে পড়ন্ত বিকেল বা প্রত্যুষের প্রথম প্রহরটি ছাড়া। এমন কি সানগ্লাস পরেও নয়। তাকালে চোখের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে, তাকে বলে "সোলার রেটিনোপ্যাথি" । কোনওভাবে পশুপাখিও তা জানে, তারাও সূর্যের দিকে তাকায় না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্য গ্রহণের সময়ও বিশেষ চশমা ছাড়া না তাকাতে। কারণ হলো ইউভি রে। আলোর চোখ ঝলসানো উজ্জ্বলতা না থাকলেও, এই ইউভি রেডিয়েশন চোখের বিরাট ক্ষতি করে ফেলতে পারে। তাই বিশেষ চশমা পরে তাকাতে হবে, সেটা সাধারণ সানগ্লাসও কিন্তু নয়। আচ্ছা , পশুপাখি যদি গ্রহণের সময় সূর্যের দিকে তাকায় তাহলে কি হবে? ইউভি রেডিয়েশনের কারণে তাদেরও তো চোখের ক্ষতি হওয়ার কথা। আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, তারা কখনই , এমন কি সূর্য গ্রহণের সময়ও মানুষের মতো সূর্যের দিকে তাকায় না।
শুধু মাত্র পূর্ণ সূর্য গ্রহণের সময়টুকুতে বিশেষ চশমা ছাড়াই তাকানো যেতে পারে। ইরিতে চার মিনিট থাকবে এই পূর্ণ সূর্যগ্রহন। গ্রহণ শুরু হবে দুইটা দুই মিনিট, শেষ হবে সাড়ে চারটায়। তিনটায় সেই মহেন্দ্রক্ষণ, যখন পৃথিবী ভরদুপুরে বিচিত্রভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। সূর্যের জায়গাটা কাল, শুধু তার পাশের সোলার করোনা উজ্জ্বল আঁকাবাঁকা হয়ে দেখা যাবে। এই করোনা বা মুকুট আসলে তার বহু মিলিয়ন মাইল বিস্তৃত , সুক্ষ গ্যাসীয় বহিরাবরণ। মূল সূর্যটার উজ্জ্বলতার কারণে আমরা সেটাকে কখনোই দেখতে পাই না।
এই সূর্যগ্রহন নিয়ে প্রাচীন মানুষের কত বিভ্রান্তি, কত ভয়। কত ঘটনার বিবরণ না আছে ইতিহাসে। চীনের মানুষেরা ভাবতো, এক ড্রাগন এসে সূর্যকে খেয়ে ফেলছে। তারা ঢাক ঢোল পিটানো শুরু করতো। গুনীনরা আকাশের দিকে তীর ছুড়তো। তারপর কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্য আবার বেরিয়ে আসতো। তখন তারা আরও নিশ্চিত হতো যে ঢাক ঢোলের আওয়াজে সূর্যকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছে সেই ড্রাগন। তারপর আছে রাহুর গ্রাস। রাহুর গলা কাটা, তাই সূর্যকে গিলে ফেলার কিছুক্ষন পরেই কাটা গলা দিয়ে সূর্য আবার বেরিয়ে আসে। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালে বৰ্তমান তুরস্কের আনাতোলিয়ায় দুই জাতির মধ্যে চলমান দীর্ঘ যুদ্ধই থেমে গিয়েছিল, হঠাৎ সূর্য গ্রহণের কারনে।
তবে আধুনিক মানুষ জানে মহাকাশে জ্যোতিষ্কের গতিপথের কারণে এটা ঘটছে। সৌরজগতের বেশ দূরের একটি উপরিপাতন /সমপাতন ঘটনা তাদের উপরে সরাসরি ছায়াপাত করে অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা করছে। শুধু একটা গা ছমছমে ব্যাপার নয়, এই যে সৌর জগতে আমাদের অবস্থানকেই তুলে ধরে।
৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের তেরটি অঙ্গরাজ্য থেকে পূর্ণ সূর্যগ্রহন দেখা যাবে। আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে প্রায় পুরো যুক্তরাষ্ট্র থেকেই। কত মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে তার ইয়ত্তা নাই। রাস্তা জ্যাম হয়ে যাবে। বলা হচ্ছে, বিশেষ করে সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে, যখন সব মানুষ একসঙ্গে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করবে, তখন। যুক্তরাষ্ট্রের এই সমস্ত বড় শহর থেকে আগামীকাল পূর্ন গ্রহণ দেখা যাবে - অস্টিন (টেক্সাস), ডালাস (টেক্সাস), ইন্ডিয়ানা পলিস (ইন্ডিয়ানা), ক্লিভল্যান্ড (ওহাইও), বাফেলো (নিউইয়র্ক), রোচেস্টার (নিউইয়র্ক), বার্লিংটন (ভারমন্ট) ।
কয়েকটা প্রধান শহর, যেখানে আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে, তাদের সময় এবং গ্রহণের মাত্রা দেখে নিতে পারেন। সূর্য গ্রহণটা কিন্তু প্রায় দু' / আড়াই ঘন্টা ধরেই চলবে। এই সময়গুলোতে ওই শহরে সবচেয়ে বেশি পরিমান গ্রহণ দেখা যাবে, অর্থাৎ পুরো গ্রহণের মাঝামাঝি সময়।
নিউইয়র্ক শহরে ৯০% (৩ টা ২৫ মিনিট ), নিউজার্সির নিউয়াক এ ৯০% (৩ টা ২৭ মিনিট), ওয়াশিংটন ডিসিতে ৮৭% (৩ টা ২০ মিনিট), ফিলাডেলফিয়া ৮৭% (৩টা ২৩ মিনিট), আটলান্টা ৮১% (৩ টা ৪ মিনিট), লস এঞ্জেলেসে ৪৯% (১১ তা ১২ মিনিট), বস্টন ৯২.৫% (৩ টা ২৯), হিউস্টন ৯৪% (১ টা ৪০ মিনিট), শিকাগো ৯৪% (২ টা ৭ মিনিট) গ্রহণ থাকছে।
এ এক দুর্লভ দৃশ্য তাই, খোলা জায়গায় গিয়ে দেখতে ভুলবেন না। আবারও, একেবারে পূর্ন গ্রহনের সময়টুকু ছাড়া, আংশিক গ্রহণের সময় সূর্যের দিকে সরাসরি তাকাবেন না। তাকালে বিশেষ চশমা পরতে হবে। মধ্যযুগের একজন গণিতবিদ লিখে গেছেন, যখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হলো, তখন চারদিক রাতের থেকেও বেশি অন্ধকার হয়ে গেলো, আকাশ থেকে উড়ন্ত পাখিরা ভয়ে মাটিতে ঝরে পড়া শুরু করলো। তিনি ১৫৬০ সালে পর্তুগালে দেখা সূর্যগ্রহণের বিবরণ এভাবে লিখে গেছেন।
যদিও সেটা সত্য কি না এখন অনেক বিজ্ঞানীর মনেই সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে পশুপাখি নানান ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়। যেমন রাত হয়ে গেছে ভেবে অনেক পাখি নীড়ে ফিরে যায়, পরিযায়ী পাখিরা আকাশে উড়ে যায়এবং আবার সূর্য দেখা দিলে তারা নতুন দিন শুরু করে। ঝিঁঝি পোকা, ব্যাঙ সন্ধ্যার সুরে ডেকে উঠে। জিরাফ দৌড়ানো শুরু করে। ফ্ল্যামিংগো কাছাকাছি জড়ো হয়। প্রায় সব প্রাণীই সতর্ক এবং কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তবে গ্যালাপোগাস দ্বীপের কচ্ছপগুলো আরও একধাপ এগিয়ে। এই সময় বংশবৃদ্ধির জন্যে তারা পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়।
কোনও একটি নির্দিষ্ট স্থানে পূর্ণ সূর্য গ্রহণ বিরল ঘটনা। একবার যে জায়গায় পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হয়েছে, সেখানে আরেকবার পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হতে চার শ' বছরের বেশি সময় লাগবে। তবে মানুষ ততদিন অপেক্ষা না করে নিজেরাই চলে যায় যে জায়গায় পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হচ্ছে, সেখানে। যেমন এবারের আমেরিকায় কয়েক মিলিয়ন মানুষ গাড়ি নিয়ে, প্লেনে, ট্রেনে, যে যেভাবে পারে ছুটছে পূর্ণ সূর্য গ্রহণ দেখতে। অনেকে ছয় মাস, এক বছর আগে এসব ব্যবস্থা করে রেখেছে। এটি হতে চলেছে আগামীকাল। রাস্তায় অসম্ভব জ্যাম হবে। সতর্কবাণী চারদিকে। বহু স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। এমন কি জরুরি অবস্থায় ঘোষণা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে।
আমি মাত্র ক'দিন আগে ব্যবস্থা করলাম। যাচ্ছি, পেনসিলভানিয়ার ইরিতে। হুট্ করে পরিকল্পনা। ওদিকে আশরাফ ভাই ছ' মাস আগেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আমার মতো সকালে গিয়ে বিকালে ফিরে আসা নয়, তিন দিনের জন্যে যাচ্ছেন। করারই কথা, তিনি লেখক এবং নিজেও বিজ্ঞানী।
শুক্রবার অফিসে এক্লিপ্সের কথা উঠতেই আমি একটু গর্ব করে বলতে গেলাম যে, এটা দেখতে বিমানে করে যাচ্ছি পিটসবার্গ, তারপর ড্রাইভ করে ইরি। তখন আমার কলিগ টিম আব্দেল্লা জানালো, সে চার চারটি শহরে যাওয়ার জন্যে বহু আগেই প্লেনের টিকেট কেটে রেখেছে। রিফান্ডেবল টিকেট, কাজেই সূর্যগ্রহনের আগের দিন সে তিনটা টিকেট ক্যানসেল করে হয় টেক্সাস নয়তো, নর্থ ক্যারোলিনা, নয়তো ইন্ডিয়ানা, নয়তো নিউইয়র্কের বাফেলোতে যাবে। আমি মিইয়ে গেলাম। সায়েন্স ফিকশন লেখক হিসাবে তাহলে আমার পাঁচটা টিকেটই তো তাহলে কাটা উচিত ছিল!
বিজ্ঞান লেখক ডেভিড ব্যারন বলেছেন, জীবনে একবার অন্ততঃ পূর্ণ সূর্যগ্রহন দেখা উচিত। এ অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। আমরা সূর্যের দিকে তাকাই না। আমরা সব কিছু দেখি, সবদিকে তাকাই, কিন্তু সহজাত প্রবৃত্তিতে সূর্যের দিকে সরাসরি দেখি না, একেবারে পড়ন্ত বিকেল বা প্রত্যুষের প্রথম প্রহরটি ছাড়া। এমন কি সানগ্লাস পরেও নয়। তাকালে চোখের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে, তাকে বলে "সোলার রেটিনোপ্যাথি" । কোনওভাবে পশুপাখিও তা জানে, তারাও সূর্যের দিকে তাকায় না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্য গ্রহণের সময়ও বিশেষ চশমা ছাড়া না তাকাতে। কারণ হলো ইউভি রে। আলোর চোখ ঝলসানো উজ্জ্বলতা না থাকলেও, এই ইউভি রেডিয়েশন চোখের বিরাট ক্ষতি করে ফেলতে পারে। তাই বিশেষ চশমা পরে তাকাতে হবে, সেটা সাধারণ সানগ্লাসও কিন্তু নয়। আচ্ছা , পশুপাখি যদি গ্রহণের সময় সূর্যের দিকে তাকায় তাহলে কি হবে? ইউভি রেডিয়েশনের কারণে তাদেরও তো চোখের ক্ষতি হওয়ার কথা। আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, তারা কখনই , এমন কি সূর্য গ্রহণের সময়ও মানুষের মতো সূর্যের দিকে তাকায় না।
শুধু মাত্র পূর্ণ সূর্য গ্রহণের সময়টুকুতে বিশেষ চশমা ছাড়াই তাকানো যেতে পারে। ইরিতে চার মিনিট থাকবে এই পূর্ণ সূর্যগ্রহন। গ্রহণ শুরু হবে দুইটা দুই মিনিট, শেষ হবে সাড়ে চারটায়। তিনটায় সেই মহেন্দ্রক্ষণ, যখন পৃথিবী ভরদুপুরে বিচিত্রভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। সূর্যের জায়গাটা কাল, শুধু তার পাশের সোলার করোনা উজ্জ্বল আঁকাবাঁকা হয়ে দেখা যাবে। এই করোনা বা মুকুট আসলে তার বহু মিলিয়ন মাইল বিস্তৃত , সুক্ষ গ্যাসীয় বহিরাবরণ। মূল সূর্যটার উজ্জ্বলতার কারণে আমরা সেটাকে কখনোই দেখতে পাই না।
এই সূর্যগ্রহন নিয়ে প্রাচীন মানুষের কত বিভ্রান্তি, কত ভয়। কত ঘটনার বিবরণ না আছে ইতিহাসে। চীনের মানুষেরা ভাবতো, এক ড্রাগন এসে সূর্যকে খেয়ে ফেলছে। তারা ঢাক ঢোল পিটানো শুরু করতো। গুনীনরা আকাশের দিকে তীর ছুড়তো। তারপর কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্য আবার বেরিয়ে আসতো। তখন তারা আরও নিশ্চিত হতো যে ঢাক ঢোলের আওয়াজে সূর্যকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছে সেই ড্রাগন। তারপর আছে রাহুর গ্রাস। রাহুর গলা কাটা, তাই সূর্যকে গিলে ফেলার কিছুক্ষন পরেই কাটা গলা দিয়ে সূর্য আবার বেরিয়ে আসে। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালে বৰ্তমান তুরস্কের আনাতোলিয়ায় দুই জাতির মধ্যে চলমান দীর্ঘ যুদ্ধই থেমে গিয়েছিল, হঠাৎ সূর্য গ্রহণের কারনে।
তবে আধুনিক মানুষ জানে মহাকাশে জ্যোতিষ্কের গতিপথের কারণে এটা ঘটছে। সৌরজগতের বেশ দূরের একটি উপরিপাতন /সমপাতন ঘটনা তাদের উপরে সরাসরি ছায়াপাত করে অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা করছে। শুধু একটা গা ছমছমে ব্যাপার নয়, এই যে সৌর জগতে আমাদের অবস্থানকেই তুলে ধরে।