ড: মোমেন সত্য কথা বলেননি!

শিতাংশু গুহ
  ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৪

ড: আব্দুল মোমেন ঢাকায় বন্ধু শামীম’র স্মরন সভায় একরাশ মিথ্যা কথা বলেছেন। তিনি যা বলেছেন তার মর্মার্থ হচ্ছে, নিউইয়র্কে ২০০৭ সালে প্রায় সকল আওয়ামী লীগ নেতা ‘মাইনাস-২’ ফর্মুলার পক্ষে ছিলেন। সভাপতি খালেদ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ-র নাম তিনি উল্লেখ করেছেন। একই সাথে ঐসময় তিনি কি করেছেন এর একটি ফিরিস্তি দিয়েছেন, যেটি পুরোটাই অসত্য। ভাবছি, একজন ভদ্রলোক এত মিথ্যা বলে কি করে? 
প্রকৃতপক্ষে ২/১জন বাদে প্রায় সবাই তখন ‘মাইনাস-২’ ফর্মুলার বিপক্ষে ছিলেন। এই ২/১জনের মধ্যে একজন ড: মোমেন। মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার আর ক’টা দিন ক্ষমতায় থাকলে ড: মোমেন তাদের সাথে যোগ দিতেন। ছাত্রজীবনে এনএসএফ, পরে খালেদা জিয়ার শাসনামলে ,’ম্যাডাম’-র সাথে সাক্ষাৎ এবং পাত্তা না পাওয়া ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন ড: মোমেন আওয়ামী লীগে। 
ওই সময় সজীব ওয়াজেদ জয়-এর হার্ভার্ডে অধ্যয়ন, এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা’র ছেলের সাথে দেখা করতে ঘনঘন বোষ্টন অবস্থান সফলভাবে কাজে লাগান সুযোগ সন্ধানী ড: মোমেন, তার ভাগ্য খুলে যায়! তদুপরি ছিলেন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অর্থমন্ত্রী মুহিত। কৃতজ্ঞ শেখ হাসিনা তার নুন খেয়েছেন, কিন্তু ড: মোমেনকে দিয়েছেন যোগ্যতার চাইতে অনেক বেশি। 
মনে হয়, আমাদের মোমেনভাই, মন্ত্রিত্ব হারিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এটিও সত্য, ড: মোমেন আর কখনো মন্ত্রী হবেন না, সামনে হয়তো এমপি-নিয়েও টানাটানি হবে? ড: মোমেন কখনো যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কিছু ছিলেন না, উপদেষ্টাও নন, তবে তিনি সাফল্যের সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে তরতর করে উপরে উঠে গেছেন। 
ড: মোমেন যখন প্রথম জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত হলেন, তখনি একদিন শেখ সেলিমের সাথে আমার কথা হয়। তিনি বললেন, তোমরা মোমেনকে রাষ্ট্রদূত বানাইয়া দিলা? বললাম, সেলিমভাই, আপনার বোন বানিয়েছে, তিনি নুন খেয়েছেন, প্রতিদান দিলেন। সেলিমভাই বললেন, মোমেন আমাদের সাথে এফএইচ হলে থাকতো, এনএসএফ করতো। বললাম, জয় তার পক্ষে, আমাদের কথা কে শুনে?  
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের এমন মিথ্যা অপবাদ দেয়াটা ঠিক হয়নি, ড: মোমেন এমন মিথ্যাচার না করলেও পারতেন। এসব নেতাকর্মীরা হয়তো ‘জিন্দাবাদ’ ছাড়া কিছু বুঝে না, কিন্তু এঁরা ‘এন্টি-শেখ হাসিনা’ ছিলো তা মেনে নেয়া যায়না। বরং ড: মোমেন, এখন যতটা ভারত ও শেখ হাসিনা’র তোষামোদ করছেন, খালেদা জিয়া সুযোগ দিলে ঠিক উল্টোটা করতেন। 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তিনি যে বায়োডাটা দিয়েছেন সেটিও মিথ্যাচার পরিপূর্ন। একদিন তিনি হটাৎ করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করলেন, পরে পিছু হটলেন, কারণ মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি পরম নিষ্ঠার সাথে পাকিস্তানের সেবা করেছেন। ড: মোমেন-র বিরুদ্ধে লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়, বরং এ সত্য তুলে ধরা যে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী নেতাকর্মীরা কখনই সংস্কারবাদী ছিলেন না।