নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর ব্রিজের দক্ষিণ পাশে প্রায় ৬ হাজার বর্গফুট দেওয়ালজুড়ে বিশাল ক্যালিগ্রাফি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কাঁচপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এরইমধ্যে ক্যালিগ্রাফির একাধিক ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সেইসঙ্গে এক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ পায়। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এই ক্যালিগ্রাফির কাজ সম্পন্ন হয়।
এই ক্যালিগ্রাফির অপার সৌন্দর্য সামনা সামনি দেখার জন্য ওই স্থানে পথচারী থেকে শুরু করে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। অনেকেই ছবি তুলছেন। আবার অনেকেই ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। গত তিন দিন ধরেই এই ক্যালিগ্রাফি নিয়ে সারাদেশে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শিল্পী মোল্লা মুহাম্মাদ হানিফের পরিচালনায় আনাস খান, মুহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম হাম্মাদ, রুসাইফা হক, সিয়াম খান, মোস্তানসির মুজাহিদ, সাকিবুল হাসান, জুনায়েদ আহমেদ, আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, জুবায়ের আহমেদ, আবদুল্লাহ তামিম, আবু হোরায়রা তানজিম, মাহাদী রাকিব, সাইফুল ইসলাম, সায়েম মোহাম্মদ প্রান্ত, কাওসার আহমেদ সজীব, রেজাউল ইসলাম, আবরার খান, শিফাত, মাসুম সৌদসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর প্রচেষ্টায় এই ক্যালিগ্রাফি সম্পন্ন করতে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগে।
কাঁচপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ক্যালিগ্রাফি সম্পন্ন করতে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রবাসী ও সাধারণ মানুষদের সহযোগিতার কারণে এই অর্থ যোগাড় করতে তেমন কষ্ট হয়নি। পাশাপাশি সবাই বিনা পরিশ্রমে স্বতস্ফূর্তভাবে কাজটা করায় খরচ তুলনামূলক কম হয়েছে।
ক্যালিগ্রাফি করা শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৮ আগস্ট থেকে আমরা এই কাজ শুরু করি। পুরো কাজটা এতো তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করাটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। আমরা এখন কাঁচপুর ব্রিজের উত্তর পাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। এই স্মৃতিস্তম্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ জেলায় মৃত্যুবরণ করা ৩৪ জন শহীদের নাম উল্লেখ থাকবে।
এই ক্যালিগ্রাফি করার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন করে স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ রয়েছি তা এই ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে। সেইসঙ্গে আমরা মুক্তিকামী ফিলিস্তিনের নাগরিকদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছি। ফিলিস্তিন স্বাধীন করার জন্য অনেক মানুষের রক্ত ঝরছে। আমাদের প্রত্যাশা, ফিলিস্তিনও অতি শিগগিরই স্বাধীনতা লাভ করবে। মোট কথা, আমরা সবসময় ফিলিস্তিনবাসীর পাশে ছিলাম, এখনো আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো। ক্যালিগ্রাফির মধ্য দিয়ে আমরা এই বার্তাই বিশ্ববাসীকে দিয়েছি।