দুইজন গুরুত্বহীন প্রার্থী নিয়ে নাটকীয় মোড়ে আমেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

সোহানা নাজনীন
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯

'আমেরিকায় প্রতি টার্মে একজন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও অনেক জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট দুই টার্ম থেকেছেন। এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টার্ম থেকেছিলেন, বাইডেন ও তাই। দুজনেরই বয়স বেশি, বয়স্ক হলেও রিপাবলিকান দলে ট্রাম্পের প্রভাব যথেষ্ট, তাই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে কোন অসুবিধা হয়নি। কিন্তু ডেমোক্রেটিক দলে বাইডেনের এই পুননির্বাচিত হবার সুযোগ জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে পার্টির নেতৃবৃন্দের চাপে। সর্বশেষে তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে থাকতে চাননি বলা হলেও দলীয়গত কারণে তাকে সরতে হয়েছে। এক্ষেত্রে আবারো এক টার্ম প্রেসিডেন্টশিপ আসাতে আমেরিকার স্থিতিশীলতা বা সরকার ব্যবস্থায় একটা প্রভাব পড়ছে। এতে করে প্রেসিডেন্ট তার কর্মসূচীগুলো পূরণ করতে পারেন না। ট্রাম্প যেমন অসমাপ্ত করে রেখে গেছেন তেমনি বাইডেনও রেখে গেলেন। যদি কমালা হ‍্যারিস জয়ী হন তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে বাইডেনের কর্মসূচীগুলো অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি"- আসন্ন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন মাহফুজুর রহমান। ১৯ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাপ্তাহিক সম্প্রচার "টক অফ দ্য উইক" অনুষ্ঠানে  অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুর রহমান। তিনি একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদক। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত bornomalanews.com ও banglanewyork.com, সাবেক সভাপতি, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। এই বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, ৫ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প কে ঘিরে জাতি অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন কমালা। কমালার প্রতি ৪৭ শতাংশ এবং ট্রাম্পের প্রতি ৪২ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। কে হতে যাচ্ছেন আমাদের আগামীর প্রেসিডেন্ট? এই প্রশ্নের উত্তরে মাহফুজুর রহমান বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। এখানে রয়েছে দুটো রাজনৈতিক দল যারা পালাক্রমে আমেরিকার রাষ্ট্র এবং শাসন ব্যবস্থা পালন করে আসছে। তবে দলের থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদেরকে নিয়ে দুটিদলের মধ্যে তেমন উল্লাস নেই। সবাই তাদেরকে সঠিক প্রার্থী হিসাবে ভাবে না। বলতে গেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন এক টার্মে শাসন করেছিলেন তার শাসন কার্যক্রম সম্পর্কে রিপাবলিকানদের ভিতরে বিরোধ ছিল। এখনো একশো এগারো জন রিপাবলিকান সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ডোনাল্ড ট্রাম্প কে সমর্থন করছেন না। তবে অদ্ভুতভাবে তারা কমালা হ‍্যারিসকে পছন্দ না করলেও তাকে সমর্থন দিচ্ছেন। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছে বিগত বুশ জুনিয়র, বুশ সিনিয়র, উচ্চ পর্যায়ের আইন প্রণেতারা। গত এক বছরের প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইনে কমালা হ‍্যারিস ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। বয়স এবং অসুস্থতার কারণে দলীয় চাপে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সরে দাঁড়ানোতে কমালা হ‍্যারিস হঠাৎ করে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পদে এসেছেন। এটি ডেমোক্রেটিক দলের জন্যে হতাশাজনক। তারা কখনোই বাইডেনের বিপরীতে কমলাকে পছন্দ করেনি। যদি প্রথমেই বাইডেন সরে দাঁড়িয়ে পদ উন্মুক্ত করে দিতেন তাহলে হয়তো ডেমোক্রেটিক দল আরো শক্তিশালী প্রার্থী পেত। বর্তমান আমেরিকান প্রজন্ম বাইডেনের কার্যকলাপ, বিদেশ নীতি সমর্থন করে না। মধ্যপ্রাচ্যে ইজরাইলের গণহত্যার নেপথ্যে সমর্থক হিসাবে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে দেখা গেছে। তাদের বেশির ভাগই ডেমোক্রেট সমর্থক। দুই দলের দুজন গুরুত্বহীন প্রার্থীকে নিয়ে আমার আশঙ্কা হয়। কে নির্বাচিত হবেন সেটার চাইতে সবথেকে কম ভোটার টার্ন-আউট হবার সম্ভবনা আছে। পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন কমলা হ‍্যারিস, এই জরিপগুলো যদি সত্যি হয় তাহলে সেই প্রথম বারের মতো ট্রাম্পকে হারিয়ে হিলারী ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হতেন। তখন হিলারী ক্লিনটন বহু জরিপেই এগিয়ে ছিলেন। ট্রাম্পের এই পিছিয়ে থাকা প্রথমে যেমন হিলারী ক্লিনটনকে হারিয়ে দিয়েছিল, পরবর্তীতে কমলা হ‍্যারিসকে হারিয়ে সেই ম্যাজিক নাম্বার জিতে নেবেন কিনা সেটি দেখার বিষয়। সেই নাটকীয় মোড়ের জন্যে আমাদের আরো ছয় সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।"ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নানা বিতর্কিত নীতির জন্য পরিচিত ছিলেন। তার এবারের প্রচারণায় কী কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা বা তার সমর্থকরা কতটুকু আগ্রহী-এই ব্যাপারে মাহফুজুর রহমান বলেন, "ট্রাম্পের ব্যাক্তিগত মনোভাব এখন ডেমোক্র্যাট দলের নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে রিপাবলিকান দলকে এতো উগ্র দেখিনি, যেভাবে ট্রাম্প উগ্রতা চালু করেছেন। প্রেসিডেন্ট রিগ্যান নেতৃত্ব দেবার সময় যে ধারা তৈরি করেছিলেন তা রিগ্যানিজম নামে পরিচিত ছিল, যা  ছিল রিপাবলিকান পার্টির গৌরব। কিন্তু এখনকার ট্রাম্পিজম রিপাবলিকান দলের আসল নীতি না। তিনি রিপাবলিকান দলকে গ্রাস করছেন, তার নিজস্ব ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-জেদ-অজ্ঞতা দলের  উপরে চাপিয়ে দিচ্ছেন। নিজস্ব নীতিতে অটল থেকে অভিবাসন ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান, বড়লোকদের ট্যাক্সের ব্যাপারে সুবিধা দেয়া, একারণে ট্রাম্পের প্রতি উগ্র রিপাবলিকানদের সমর্থন বাড়ছে। প্রতিপক্ষ কিংবা মহিলা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রতি তার শ্রদ্ধা বোধের ঘাটতি রয়েছে, অশ্লীল শব্দ-কটুক্তি করে তিনি আরো উগ্রভাবে আবির্ভাব হয়েছেন।" ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ‍্যারিসের প্রচারাভিযানের মূল বিষয়বস্তু  সম্পর্কে তিনি জানান, " দুঃখজনক হচ্ছে এই দুইজন প্রচারণার ক্ষেত্রে বিশ্ব রাজনীতির মূল বিষয় ইজরায়েলী বর্বরতা, মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট সম্পর্ক এড়িয়ে যাচ্ছেন, কোন আলোচনায় আসছেন না। কেউ নির্বাচিত হলে গাঁজায় গণহত্যা বন্ধ হবে কিনা, ইজরায়েলের উপর নিষেধাজ্ঞা হবে কিনা, এই মতামতও দিচ্ছে না। প্রলম্বিত যুদ্ধের মাধ্যমে ইউক্রেনের জনগণকে যে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রাখা, যুদ্ধ বজায় রাখতে আমেরিকার বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে। এই বিষয়ে তারা কেউ কথা বলছেন না। এই প্রথম বারের মতো আমরা দেখছি যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গে মনোযোগ দিচ্ছেন না। সিনেট এবং কংগ্রেসেও একই অবস্থা। গাঁজায় অস্ত্র সরবরাহের জন্য, গাঁজায় গণহত্যায় সহযোগীতার জন্যে অর্থের যোগান দিচ্ছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গর্ভপাত এবং অভিবাসন বিষয়। রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্টের অবস্থান তার দলের সমর্থকরা শক্তিশালী ভাবে সমর্থন করেন। ট্রাম্প এই বিষয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। গর্ভপাত এবং অভিবাসন বিষয়ে ডেমোক্র্যাট দলের অবস্থান আগের মতোই আছে, সেটিকে ধারণ করে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় এগোচ্ছেন। কামালা হ্যারিস নির্বাচনী প্রচারনায় তার নিজস্ব চিন্তা চেতনা প্রসূত করার সময় পাননি। ফলে তিনি বাইডেন ও তার রাজনৈতিক দলের নীতিমালাই অনুসরণ করে যাচ্ছেন। নারী ভোটারদের ভূমিকা এবারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জটিল স্টেটগুলোতে কমালা হ‍্যারিস নারীদের সমর্থনে এগিয়ে আছেন। অভিবাসন ও গর্ভপাত, এই দুটি বিষয়ে এবারের নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যাবধানের সৃষ্টি করবে। অভিবাসীর দেশ আমেরিকা, অভিবাসন প্রক্রিয়াতে সবাই এদেশে এসেছে, ট্রাম্প এবং কমালা হ‍্যারিস দুজনেরই পিতৃ পুরুষরা এদেশে এসেছেন। তারা সেই ধারা বজায় রাখতে সফল হবে কিনা সেটি আমরা দেখবো। গর্ভপাত নারীর সবথেকে বড় অধিকার, আমেরিকার নারীরা সেই অধিকার বা মর্যাদা ফিরে পায় কিনা সেটি এবারের নির্বাচনে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।" কমলা হ্যারিস নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হলে, তার দ্বিতীয় মেয়াদে কেমন ধরনের নীতি প্রয়োগ করতে পারেন-উপস্থাপিকা ফরিদা ইয়াসমীনের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "কমালা হ‍্যারিস নির্বাচিত হলে আমেরিকার সাড়ে তিনশ বছর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে সবচাইতে বিরল ও চমকপ্রদ ঘটনা ঘটবে। আমেরিকানরা একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে গ্রহণ করবেন, যিনি বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী রাষ্ট্রের এবং বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হবেন। এর আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে একজন নারীকে তারা পেয়েছিলেন। শুধু আমেরিকায় নয়, সারা বিশ্বে একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটবে, বিশ্বের নারীদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হবে। ইউরোপ এবং তৃতীয় বিশ্বে নারীরা সর্বচ্চো পদে নির্বাচিত হলেও আমেরিকায় এই বিষয়টি এখনো অসাধ্য। কমালা হ‍্যারিস জয়ী হলে একটা ইতিহাস গঠিত হবে, তিনি আমেরিকাকে অনেক কিছু দেবার চেষ্টা করবেন। আশা করছি তাকে সাহায্য করার জন্যে ডেমোক্র্যাটিক দল এগিয়ে আসবে, আমরা একটা নতুন ধরনের সরকার প্রধান পাব। তেমনিভাবে ট্রাম্প জয়ী হলে তার গতানুগতিক উপায়ে আমেরিকার পররষ্ট্রনীতির চাইতে আমেরিকার আভ্যন্তরীণ নীতি প্রাধান্য পাবে। তিনি আমেরিকার তৈরি জিনিস, আমেরিকান গৌরবকে তুলে ধরার রাজনৈতিক কৌশলকে বাস্তবায়ন করবে। এজন্যে অনলাইন ভিত্তিক চাকরিগুলো কমে যাবে এবং আমেরিকায় কর্মসংস্থা সৃষ্টির ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। একই সাথে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও পরিবর্তন  আসবে। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আমেরিকার অযথা যুদ্ধে জড়িয়ে অর্থব্যায় থেকেও সরে আসবে বলে আশা রাখি।"গত ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর আবারো হত‍্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্ট পাম বিচ এলাকায় অবস্থিত একটি গলফ ক্লাবে এই হামলার চেষ্টা হয়। পেনসিলভানিয়া হামলার পর এটা দ্বিতীয় হত্যাচেষ্টা। গলফ মাঠের কাছে ঝোপঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীর নল দেখতে পান ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। তারা চারটি গুলি চালালে ওই ব্যক্তি বন্দুক ফেলে পালিয়ে যান। ট্রাম্পের উপর কারা এত ক্ষিপ্ত? এ নিয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, "আমেরিকান নির্বাচন ব্যবস্থায় জণগণের ভোটেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। কিন্তু গণতন্ত্রের সবচাইতে দুঃখজনক ব্যাপার যে প্রেসিডেন্ট সরাসরি পপুলার ভোটে নির্বাচিত হন না। তিনি নির্বাচিত হন ইলেক্টোরাল ভোটে। কোন প্রার্থীর গুরুত্ব বাড়ানো কিংবা গুরুত্বহীন করার জন্যে মিডিয়া ব্যবহার করা হয়। সেখানে জনবিচ্ছন্ন ঘটনাও ঘটে, গলফ ক্লাবে ঘটনা হাস্যকর। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তাই এমন নাটক তৈরি হচ্ছে। ঘটনা কতোটুকু ঘটে আমরা জানিনা, মিডিয়া সেটিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে মানুষের কাছে প্রচার করে একটা বাজে ইমেজ তৈরি করে। এটা ট্রাম্পকে আরো গুরুত্বপূর্ণ বানানোর জন্য মিডিয়ার কৌশল হতে পারে, কিংবা তৃতীয় কোন শক্তি হতে পারে। যে শক্তি এই দেশের রাজনীতিকে কন্ট্রোল করে যা আমরা চোখে দেখিনা। আমেরিকার রাজনীতি সেজন্যেই এতো দুর্বোধ্য।" আসন্ন নির্বাচনে বাঙালিদের মধ‍্যে কে বেশি জনপ্রিয়-ট্রাম্প নাকি কমালা? এ নিয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, "এক সময় বাংলাদেশীরা নিরঙ্কুশভাবে ডেমোক্রেট প্রার্থীকে সমর্থন করতো। বাংলাদেশীদের মধ্যে দেশীয় দলের ভিন্নতা থাকলেও তারা আমেরিকান নির্বাচনে চোখ বন্ধ করে ডেমোক্রেটকে সমর্থন করতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রিপাবলিকানদের সমর্থন করছে বাঙালিরা। এটা একটা নতুন ধারা, আমি মনে করি এটি ভালো পরিবর্তন। বাংলাদেশীদের সুবিধা আদায়ের জন্যে এই দেশের রাজনীতিতে সব দলের সাথেই আমাদের সম্পৃক্ততা থাকা উচিত। বর্তমান সময়ে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি বিশেষ করে গাঁজায় বর্বরতা এবং গণহত্যার কারণেই আমাদের নতুন প্রজন্ম অদ্ভুতভাবে ডেমোক্রেট বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। তারা মনে করে ডেমোক্রেটদের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে সমস্যা আছে। প্রবীন বাংলাদেশীরা যারা রাজনীতি করেন তাদের সে সম্পর্কে তত ধারণা নেই। বাঙালি নতুন প্রজন্মের সিংহ ভাগই ডেমোক্রেট বিরোধী। নির্বাচনকে ঘিরে তথ্যবহুল আলোচনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন ফরিদা ইয়াসমীন, পরিচালনা ও কারিগরি সহযোগিতায় ছিলেন এইচ বি রিতা। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার 'টক অফ দ্য উইক"  অনুষ্ঠানটি প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ফেসবুকে লাইভে সরাসরি সম্প্রচার হয়।