সরকারি হস্তক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ 

বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিম

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৭

আসন্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনে নাটকীয় মোড় এনে দিলেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সরকারি হস্তক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বুধবার নিজের পুরো প্যানেলসহ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন সকালেই বিসিবিতে এসে নিজের প্রার্থিতা তুলে নেন এই তারকা ক্রিকেটার।
আজ সকাল সোয়া দশটার দিকে তামিম ইকবাল তার প্যানেলের সদস্য রফিকুল ইসলাম বাবু, মাসুদুজ্জামানসহ অন্যদের নিয়ে বিসিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হন এবং রিটার্নিং অফিসারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। ক্লাব ক্যাটাগরি (ক্যাটাগরি-২) থেকে পরিচালক পদে লড়ছিলেন তামিম।
সংবাদমাধ্যমকে তামিম জানান, বেশ কিছু ক্লাবকে কাউন্সিলরশিপ না দেওয়া এবং পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে তিনি ও তার প্যানেল অসন্তুষ্ট। এই কারণেই তারা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই নাটকীয় সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে মঙ্গলবারের হাইকোর্টের একটি আদেশকে। সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তৃতীয় বিভাগ থেকে আসা ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ স্থগিত করেন। এই আদেশের পর থেকেই তামিমের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর গুঞ্জন জোরালো হয়।
কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই তামিম বিসিবির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে আসছিলেন এবং নির্বাচনে জয়ী হলে সভাপতি হওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন তিনি। আজ দুপুর ২টায় প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর আগামী ৬ অক্টোবর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সরকারি হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে এক্সিউম ক্রিকেটার্সের ইসরাফিল খশরু বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই এখানে কোনো স্বচ্ছতা ছিল না। এখানে বিভিন্নভাবে প্রভাব সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনি জেলা, বিভাগ, এখন ক্লাব লেভেলে বলেন, ১৫টা ক্লাবকে একবার বাতিল করা হচ্ছে, আবার পরের মুহূর্তে এটাকে আবার বৈধ করা হচ্ছে। এখানে দেখা যাচ্ছে যে একটা নগ্ন হস্তক্ষেপ আছে এবং এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ আমি দেখছি না। সেটার ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা নমিনেশন প্রত্যাহার করে নিবো, যেটা করে নিয়েছি আমরা। অনেকেই করছেন। আমরা একটা সংবাদ সম্মেলন খুব সহসাই করবো, যেখানে আমরা আমাদের বক্তব্য পেশ করবো। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থা দেখছি, এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নাই এবং খুবই দুঃখজনক যে বিসিবির মতো একটা জায়গায় এরকম একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছে। খুবই দুঃখজনক।’
কোথায় কোথায় হস্তক্ষেপ হয়েছে টা জানিয়ে খশরু বলেন, ‘আমরা শুনেছি বিভিন্ন জায়গায় ডিসিদেরকে, যখন জেলা-বিভাগ লেভেলের কাউন্সিলর নির্বাচনের কথা আসছে, তখন ডিসিদেরকে প্রভাবিত করা হয়েছে। আমরা শুনেছি তাদেরকে কল করে, ফোন করে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা প্রভাব বিস্তারের দৃষ্টান্ত পেয়েছি। এবং এই যে ১৫টা ক্লাবের বিষয়, যেটা হিয়ারিং হয়ে ১৫টা ক্লাবকে বৈধ ঘোষণা করা হলো, আবার কয়দিন আগে আমরা দেখলাম আবার তাদেরকে বাতিল করা হয়েছে। আমি এখানে দেখছি একটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখছি। তো খুবই দুঃখজনক এবং আমাদের যেটা আমরা আজকে পজিশন নিয়েছি, এটা হচ্ছে আমাদের নৈতিক সিদ্ধান্ত যে, এভাবে একটা বিসিবি নির্বাচন হতে পারে না। আর নতুন বাংলাদেশে আমি এরকম নির্বাচন দেখতে চাই না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যেটা আমরা মনে করি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের... বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এরকম একটা নির্বাচন তো হতে পারে না এবং ম্যানুফ্যাকচারড ইলেকশন হতে পারে না। সেটার ভিত্তিতে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমরা যেটা বলছি, আমরা সুন আমাদের আবার অফিশিয়াল বক্তব্য দিব একটা সংবাদ সম্মেলন করে।’