যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক রদবদল দেখা গেছে। মুসলিম ও আরব ভোটাররা ডেমোক্র্যাটদের দুই দশকের আনুগত্য থেকে সরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তৃতীয় দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
গাজায় যুদ্ধ পরিচালনা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, যা মূলত মুসলিম ও আরব ভোটারদের দলত্যাগে প্রভাব ফেলেছে। এই ক্ষোভের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলোতে ট্রাম্পের জয় সম্ভব হয়েছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) জরিপ অনুযায়ী, মুসলিম ভোটারদের অর্ধেকেরও কম ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে সমর্থন করেছেন। অধিকাংশ মুসলিম ভোটার তৃতীয় দলের প্রার্থী বা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন।
মুসলিম ভোটে রদবদল
আরব আমেরিকান ইন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট জেমস জগবি বলেন, আরব আমেরিকান ভোটাররা দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে এলেও গাজা ইস্যু তাদের এই অবস্থান বদলাতে বাধ্য করেছে। মিশিগানের ডিয়ারবোর্ন, ডিয়ারবোর্ন হাইটস, এবং হ্যামট্রামাক অঞ্চলে এই দলত্যাগের প্রভাব স্পষ্ট দেখা গেছে। ডিয়ারবোর্নে ৫৫ শতাংশের বেশি মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের বংশোদ্ভূত, এবং এই অঞ্চলে ট্রাম্প ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন, যেখানে ৪ বছর আগে তার ভোট ছিল ৩০ শতাংশ।
গাজার ইস্যুতে ক্ষোভ
ডিয়ারবোর্ন-ভিত্তিক রিয়েলটর ও রাজনৈতিক কর্মী সামরা লুকমান বলেন, গাজা ইস্যুতে ক্ষোভ থেকে এই দলত্যাগ হয়েছে। লুকমান বাইডেনের প্রচারণায় কাজ করলেও এবার গাজার পরিস্থিতি দেখে ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতা করেন। শেষবার ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ মুসলিম আমেরিকানদের বড় ধরনের সমর্থন পেয়েছিলেন, তবে ৯/১১-এর পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
নির্বাচনের প্রভাব
কিছু বিশেষজ্ঞ মুসলিম ভোটারদের এই দলত্যাগকে বিশ্লেষণে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুসলিম ভোটারদের মধ্যে প্রধান ইস্যু গাজায় সংঘাত হলেও অর্থনীতি ও জীবিকার বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আইএসপিইউর এক জরিপে দেখা গেছে, মুসলিম ভোটারদের কাছে অর্থনীতি তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।