ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য অভিবাসন একটি প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে অভিবাসী সংকট এবং এর বর্তমান অভয়ারণ্য শহরের মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক সিটি নিজেকে আইন প্রয়োগের বাধার মুখে ফেলেছে। হোয়াইট হাউসের ফেডারেল অভিবাসন নীতির সাথে সহযোগিতা মেয়র এরিক অ্যাডামস ও গভর্নর ক্যাথি হোকুল উভয়কেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফেলেছে। সম্প্রতি মেয়র তার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বলে দেখা গেছে।
শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসি ভ্রমণের সময় এনওয়াই১-এর সাথে একান্তে কথা বলার সময় অ্যাডামস দাবি করেন, ফেডারেল অভিবাসন প্রয়োগের বিষয়ে মতামতের ক্ষেত্রে তিনি গভর্নরের প্রাসাদে তার সহকর্মী ডেমোক্র্যাটের সাথে একমত। অ্যাডামস বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে একমত। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সাজা ভোগ করার পরে যদি আপনি আমাদের শহরে কোনো বিপজ্জনক অপরাধ করেন, তাহলে আপনাকে নির্বাসিত করা উচিত। আমরাও একই লাইনে আছি।’ হোকুল বলেন, তিনি দোষী সাব্যস্ত অপরাধীদের তদন্তে ইতিমধ্যেই মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সাথে সহযোগিতা করছেন।
তিনি ১৪ এপ্রিল এনওয়াই১-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কেউ এখানে অপরাধ করেছে কিংবা তাদের নিজস্ব দেশে অপরাধ করেছে যদি এমন কোনো ওয়ারেন্ট থাকে এবং তারা সন্ত্রাসীদের নজরদারিতে রয়েছে, - তাহলে রাজ্য পুলিশ আপনার সাথে কাজ করবে। আমরা সেই পরিস্থিতিতে আপনার সাথে সহযোগিতা করব। আমরা জো বাইডেনের অধীনে সহজেই এটি করেছি।’
অ্যাডামস ১৮ এপ্রিল শুক্রবার তার অবস্থানের পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যা বলছি তাতে যে বিকৃতি রয়েছে তা সমাধান করা দরকার। আমি নির্বাচনের আগে যা বলেছি, নির্বাচনের পরেও বলছি: কারও অপরাধের শিকার হওয়া উকিত নয়, কোনো ব্যক্তি নথিভুক্ত বা অ-নথিভুক্ত কিনা তা বিবেচ্য নয়।’ কিন্তু অ্যাডামসের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সহযোগিতা করার এবং তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করতে দ্বিধা করছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেয়র ফেডারেল বর্ডার জার টম হোমানকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি রাইকার্স আইল্যান্ডে একটি আইস অফিস স্থাপনের জন্য সবুজ সংকেত দেবেন। সেখানে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত কিন্তু দোষী সাব্যস্ত না হওয়া ব্যক্তিরা আদালতে তাদের বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে।
তিনি ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘শহরকে নিরাপদ করতে এবং সহযোগিতা করার জন্য আমাদের সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে। আমাদের সিভিল এনফোর্সমেন্টের জন্য আইস-এর সাথে সহযোগিতা করার অনুমতি নেই, তবে আমরা অপরাধমূলক ঘটনার জন্য তাদের সাথে সহযোগিতা করব।’ অ্যাডামস ফার্স্ট ডেপুটি মেয়র র্যান্ডি মাস্ত্রোর কাছে সমন্বয়ের কাজটি হস্তান্তর করেছেন।
কিন্তু এখন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল অ্যাডামসের বিরুদ্ধে মামলা করছে। ২৯ পৃষ্ঠার একটি মামলায় অভিযোগ, মেয়র বিগ অ্যাপলের অভয়ারণ্য শহরের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছেন। এতে আরও অভিযোগ করা হয়, তার পদক্ষেপগুলো “কুইড প্রো কো চুক্তির উদ্বেগকে বাস্তবায়িত করেছে যার মাধ্যমে মেয়র তার ফেডারেল ফৌজদারি দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহারের বিনিময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন এনফোর্সমেন্ট এজেন্ডাকে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছেন”।
এদিকে, গ্রিন কার্ডধারীদের আটকের পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক একটি অভয়ারণ্য রাজ্য নয় এবং স্থায়ী নির্বাহী আদেশগুলো নির্ধারণ করে যে রাজ্য কখন ও কীভাবে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সহায়তা করে।
হোকুল গত সপ্তাহের শুরুতে প্রশাসনের উপর চাপ প্রয়োগ করেন। ১৪ এপ্রিল এনওয়াই১-কে তিনি বলেন, ‘ঈশ্বরের দোহাই, এটা আমেরিকা। স্যাকেটস হারবারে বাচ্চাদের ক্যাম্পাস থেকে তুলে নেওয়া বা বিছানা থেকে নামিয়ে দেওয়া নিয়ে আমাদের কেন চিন্তা করতে হবে? আমি গভর্নর, আমি আমার রাজ্যের জন্য লড়াই করব, কিন্তু এটা অনেক বেশি হয়ে গেছে।’