ইসরায়েলবিরোধী বক্তৃতার জেরে এমআইটির স্নাতক অনুষ্ঠান থেকে বাদ শিক্ষার্থী

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩১ মে ২০২৫, ২৩:৩৭

যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) তাদের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী মেঘা ভেমুরিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ফিলিস্তিনের পক্ষে দেওয়া বক্তব্য এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থানের জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মেঘা ভেমুরি এমআইটির ২০২৫ সালের স্নাতক ব্যাচের সভাপতি এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান মার্চাল হিসেবে তার অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের আয়োজকদের অভিযোগ, মেঘা নিয়ম ভেঙে মঞ্চে প্রতিবাদ চালিয়ে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন এবং সহপাঠীদের ইসরায়েলবিরোধী প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত নিয়ম, সময় ও পদ্ধতি লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মেলিসা নোবেলস এক ই–মেইলে জানান, মেঘাকে শুধু স্নাতক অনুষ্ঠানে নয়, সেদিন প্রায় পুরো সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপাচার্য অভিযোগ করেন, মেঘা পরিকল্পিতভাবে অনুষ্ঠান আয়োজকদের বিভ্রান্ত করেছেন।
ঘটনাস্থলে লাল কেফিয়েহ পরে মেঘা তার বক্তব্যে বলেন, এমআইটি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গবেষণা অংশীদারিত্বে যুক্ত, যা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনে এই প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণকে স্পষ্ট করে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘এমআইটি এমন একটি শক্তির সঙ্গে কাজ করছে, যারা ফিলিস্তিনকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চায়। এটি সবার জন্য লজ্জার।’
মেঘা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই ভোট দিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবিতে সহপাঠীদেরও তিনি একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানান।
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আলফারেটা শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা মেঘা ভেমুরি ২০২১ সালে আলফারেটা হাইস্কুল থেকে পাস করে এমআইটিতে ভর্তি হন। সেখানে তিনি কম্পিউটার সায়েন্স, নিউরোসায়েন্স এবং ভাষাতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি এমআইটির ‘রিটেন রেভল্যুশন’ নামের একটি ছাত্র সংগঠনের সক্রিয় সদস্য, যা বিপ্লবী ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার পক্ষে কাজ করে। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ইউসিটি নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে গবেষণার কাজও করেছেন।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মেঘার সমর্থকরা মনে করছেন, এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং মতপ্রকাশের অধিকারকে দমন করার একটি প্রচেষ্টা। অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষ বলছে, একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের পরিপন্থী। 

তথ্যসূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া