শুধু নগুক ফ্যানের স্বামী নন, আরও কয়েকজনকে স্বদেশের বাইরে অন্য দেশে বিতাড়ন করা হয়। শুরুতে তাদের মাতৃভূমির পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানোর কথা বলা হয়।
স্বামীকে বিতাড়ন করা হবে মাতৃভূমি ভিয়েতনামে। সে জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছিলেন নগুক ফ্যান। তার বাড়ি ওয়াশিংটন স্টেইটের সিয়াটলে।
এ বসন্তে সিয়াটলের বাড়িতে লাগেজে কাপড় রাখার পাশাপাশি একটি মোবাইল ফোন গুছিয়ে রেখেছিলেন ৪০ বছর বয়সী এ নারী।
তিনি জানান, তার স্বামী প্রয়োজনীয় ফরম ও ভ্রমণ নথি পূরণ করেন।
বিমানবন্দরে দুজনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ছিল দেশে থাকা পরিবার। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে নতুন করে জীবন শুরুর পরিকল্পনা ছিল ফ্যানের, কিন্তু অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তে ভেস্তে গেছে তাদের সে পরিকল্পনা।
নগুক ফ্যান ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও-এনপিআরকে জানান, তিনি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার স্বামী ঘোষণাপত্রে সই করেন। বিমানবন্দরে কে কে তাকে বরণ করতে আসবে, তাও জানিয়েছিলেন। এমন বাস্তবতায় ভিয়েতনাম বাদে অন্য কোথাও তার স্বামীকে পাঠানোর ইঙ্গিত ছিল না।
এনপিআরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নগুকের স্বামীকে বিতাড়নের সিদ্ধান্তটিও আকস্মিক ছিল না। ২০০০ সালে ইচ্ছাকৃত খুনের ঘটনায় দোষী তুয়ান ত্যান ফ্যান ২৫ বছরের সাজা খাটছিলেন।
স্ত্রী নগুক জানান, ২০০৯ সালে সাজার সময় গ্রিন কার্ডধারী তুয়ানের বৈধভাবে স্থায়ী বসবাসের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর কখনও মুক্তি পাননি তিনি।
অভিবাসী নারী আরও জানান, ওয়াশিংটনের কনেলের কয়োটে রিজ কারেকশন্স সেন্টার থেকে মুক্তির কথা ছিল তার স্বামী তুয়ানের। তিনি বিতাড়নের প্রক্রিয়ায় ছিলেন।
বিতাড়নের বিষয়টি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়ে নগুক বলেন, ‘আমরা এটা মেনে নিয়েছি। আমরা পরিকল্পনা করে এটার জন্য মুখিয়ে ছিলাম, কিন্তু তারপর মধ্যরাতে তারা (আইস) তাকে তুলে নিয়ে দক্ষিণ সুদানে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
শুধু নগুক ফ্যানের স্বামী নন, আরও কয়েকজনকে স্বদেশের বাইরে অন্য দেশে বিতাড়ন করা হয়। শুরুতে তাদের মাতৃভূমির পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানোর কথা বলা হয়। এ ছাড়া মেক্সিকো, মিয়ানমার, কিউবা ও লাওসে অভিবাসীদের বিতাড়নের পরিকল্পনা করে ট্রাম্প প্রশাসন।
পরবর্তী সময়ে অভিবাসীদের আফ্রিকার রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল ও বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ দক্ষিণ সুদানে বিতাড়নের কথা জানানো হয়।
এ সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, অভিবাসীদের ফেরত নেবে না নিজ দেশ। এ ছাড়া অপরাধের রেকর্ড থাকা লোকজনকে অ্যামেরিকায় থাকতে দেওয়া উচিত হবে না।