নিউইয়র্কের রাজনীতি নিয়ে নতুন বাকযুদ্ধের সূচনা করলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভেন্স। তাঁর তীব্র আক্রমণের লক্ষ্য নিউইয়র্ক সিটির মেয়রপ্রার্থী ও রাজনীতিক জোহারান মামদানি।
ফক্স নিউজ- এ প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ভিএন্স ৫ জুলাই একটি উদ্দীপ্ত ভাষণে মামদানির স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লেখা পোস্টকে আক্রমণ করে বলেন, “এই লোকটা নিজেকে ভাবে কী?”
জোহারান মামদানি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রকে “একটি সুন্দর, বিপর্যস্ত, অসম্পূর্ণ দেশ” বলে উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর ভাষায়, এটি এমন এক দেশ, যেটির ভালোবাসা পাওয়া সহজ নয়, কিন্তু তার জন্য লড়াই করা যায়। এই মন্তব্যই তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয় ভেন্সের মধ্যে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেন্স বলেন, “একটু কৃতজ্ঞতা তো দেখানো উচিত। এই দেশ তাকে আশ্রয় দিয়েছে, সুযোগ দিয়েছে। অথচ সে আজ বলছে, দেশ বিপর্যস্ত!” এরপর আরও বলেন, “তুমি কি কখনো দেশের জন্য জীবন দেয়া কোনো সৈনিকের চিঠি পড়েছ? তুমি কি জানো কত আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন?”
ভেন্স মামদানির পারিবারিক ইতিহাসও টেনে আনেন। তিনি বলেন, “তোমার পরিবার ইদি আমিনের অত্যাচার থেকে পালিয়ে এসেছিল এই দেশে। আজ সেই দেশকেই তুমি অসম্পূর্ণ বলো? লজ্জা হওয়া উচিত।”
একজন রাজনৈতিক নেতা যখন নিজের দেশকে 'অপরিপূর্ণ' বলেন, তখন তা অনেকের কাছেই অপমানজনক মনে হতে পারে। কিন্তু মামদানির বক্তব্য ছিল আরও গভীর। তাঁর ভাষায়—সত্যিকারের দেশপ্রেম মানে দেশকে নিখুঁত বলে চালিয়ে দেওয়া নয়, বরং তার ত্রুটিগুলোকে স্বীকার করে, ভালোবাসার জায়গা থেকে সমালোচনা করা।
এই বক্তব্যে ভেন্স রাজনীতিকদের ভদ্রতা ছাড়িয়ে ‘দেশদ্রোহ’ এবং ‘অকৃতজ্ঞতা’র মতো শব্দ ব্যবহার করেছেন। ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি সরাসরি জিজ্ঞেস করেন—“Who the hell does he think he is?”
এই বাক্যটি নিয়েই এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভেন্স- এর পক্ষে, কেউ মামদানির মতের পক্ষে।
তবে এ কথা অনস্বীকার্য—নিউইয়র্ক সিটির মেয়রপ্রার্থী মামদানি এবং ওহায়োর সিনেটর থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়া ভেন্সের এই সংঘাত কেবল ব্যক্তি কিংবা দলের মধ্যে নয়, এটি মূলত ‘দেশপ্রেম বনাম বাস্তববাদ’ এর মধ্যকার সংঘর্ষ।
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র বা বাংলাদেশ—যে দেশেই থাকি না কেন, এই প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ: দেশকে ভালোবাসা কি মানেই তার ভুল গুলো না দেখা? নাকি ভুল গুলো দেখেই আমরা তাকে আরও ভালো করতে পারি?
এ প্রশ্নই এখন আমেরিকার রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আর এই প্রশ্নে জোহারান মামদানি ঠিক না ভিএন্স—তা নির্ধারণ করবে এই দেশের ভোটাররা।