
নির্বাচনের এক মাসের বেশি সময় পর অবশেষে মুখোমুখি বসলেন নিউইয়র্ক সিটির বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামস ও নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। মঙ্গলবার গ্রেসি ম্যানশনে অনুষ্ঠিত প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকটি ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামদানি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আলোচনাটা ভালো হয়েছে। শহরের মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে কীভাবে একটি মসৃণ ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব—সেটিই মূলত আলোচনায় ছিল।”
যদিও অ্যাডামস প্রশাসনের নানা বিষয়ে তিনি আগে থেকেই সমালোচনামুখর ছিলেন, মামদানি বৈঠকের পর স্বীকার করেছেন যে কিছু উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এর মধ্যে রয়েছে শহরজুড়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কনটেইনার ব্যবহার বাড়ানো এবং আবাসন উন্নয়নে ‘সিটি অব ইয়েস’ পরিকল্পনা।
অ্যাডামসের মুখপাত্র ফাবিয়েন লেভি বলেন, “মেয়র অ্যাডামস নিশ্চিত করতে চান, নতুন মেয়র যেন প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করতে পারেন। তাই আমাদের দল সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।”
তিনি জানান, শহরের বিভিন্ন সংস্থার বর্তমান অবস্থা ও চলমান কার্যক্রম নিয়ে একটি বিস্তারিত নথিও মামদানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডামসের প্রথম উপমেয়র র্যান্ডি মাস্ত্রো ও চিফ অব স্টাফ কামিল জোসেফ-ভারলাক। মামদানির পক্ষ থেকে ছিলেন তার সম্ভাব্য প্রথম উপমেয়র ডিন ফুলাইহান এবং চিফ অব স্টাফ এল বিসগার্ড-চার্চ।
নভেম্বরের ৪ তারিখে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই ছিল দুই নেতার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ। কিন্তু নির্বাচনকালীন সময় জুড়ে ছিল তীব্র বাকযুদ্ধ। দুর্নীতির অভিযোগে নিজে চাপে পড়ে অ্যাডামস শেষ পর্যন্ত পুনর্নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এবং সমর্থন দেন অ্যান্ড্রু কুমোকে। তখন তিনি মামদানিকে আখ্যা দিয়েছিলেন “রাজাকার জেন্ট্রিফায়ারদের রাজা” ও “সিলভার স্পুন সোশ্যালিস্ট” বলে।
মামদানি পাল্টা অভিযোগে বলেছিলেন, অ্যাডামসের প্রশাসন দুর্নীতিতে জর্জরিত এবং সাধারণ মানুষের জীবনে তার কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই।
নতুন প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষ স্পষ্ট হয় গত সপ্তাহেও যখন মামদানির দল গ্রেসি ম্যানশনে ১৭০ জনের বেশি সিটি হল কর্মীর তালিকা পাঠায়—যারা আগামী ১ জানুয়ারি নতুন মেয়র দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চাকরি হারাবেন, যদি না আগেই পদত্যাগ করেন। তালিকাটির পরিধি ও চরিত্র নিয়ে অ্যাডামস প্রশাসন ক্ষোভ প্রকাশ করে।
এদিকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অ্যাডামসের বিদেশভ্রমণ নিয়েও চলছে আলোচনা। সম্প্রতি তিনি ইসরায়েল ও উজবেকিস্তান সফর করেছেন। সূত্র বলছে, তিনি ইসরায়েলের একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তাকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পদে বিবেচনা করছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে মামদানি জানান, গ্রেসি ম্যানশনে তিনি থাকবেন কি না—সেটি এখনো ঠিক করেননি।