রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কয়েকটি রুটিন চেকআপের জন্য গতকাল শনিবার তাকে হাসপাতালে আনা হয়। সেসব পরীক্ষার পর তার চিকিৎসক দলের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ডা. জাহিদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যাতে আরও খারাপের দিকে না যায় সেজন্য তার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল হাতে পাওয়ার পর চিকিৎসকরা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেবেন। ইতিমধ্যে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা তাকে পরীক্ষা করেছেন এবং তার চিকিৎসাও শুরু হয়েছে। রোববার (৩০ এপ্রিল) এসব কথা বলেন ডা. জাহিদ।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ জটিলতায় ভুগেছেন। এবার নিয়ে সপ্তমবারের মতো তাকে এই হাসপাতালে আনা হয়েছে। এবার কিছু পরীক্ষা করানোর পর মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড বারবার বলেছে, বেগম খালেদা জিয়ার যে মাল্টিপল সমস্যা, তাতে তাকে বিশ্বের যে কোনো উন্নত দেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু বারবার বলা ও আবেদনের পরও তাকে সরকার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। তাই, আবারও দেশের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাইরে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি দিতে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, বেগম খালেদা জিয়ার বেশকিছু রুটিন পরীক্ষা নিরীক্ষা নিয়মিত করা হয়ে থাকে। যেগুলো বাসায় করা সম্ভব নয় বলেই হাসপাতালে এনে সেসব পরীক্ষা করতে হয়। এরপর সেসব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এবং তার শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে, খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত মতে পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত কিছুদিন ধরে খালেদা জিয়ার লিভার ও কিডনি জটিলতা বেড়েছে উল্লেখ করে ডা. জাহিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উনার হার্টসহ বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। সর্বোপরি লিভার জটিলতার কারণে মেডিক্যাল বোর্ড তাকে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু কেন তিনি যেতে পারছে না এটা আপনারা এবং দেশবাসীও জানেন। সত্যিকার অর্থে তার সঠিক চিকিৎসা, যেটা মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাডভানস সেন্টারে করা প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে যেহেতু চিকিৎসা করা যাচ্ছে না। কাজেই উনাকে এ অবস্থায় আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডা. জাহিদ বলেন, একজন বয়ষ্ক মানুষ, যার শরীরে অনেকগুলো অসুস্থতা, তার সুচিকিৎসার জন্য বারবার বলার পরেও আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। এত অসুস্থতা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি মানসিক শক্তি ধরে রেখেছেন। তার সুচিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকদের পাশাপাশি দেশের আপামর জনগণও আশাবাদী। আমরা আশা করবো, সরকার মানবিক কারণে তাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেবে।