বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দড়িরচর-খাজুরিয়া ইউনিয়নের স্টিমারঘাট বাজারে ধারালো রামদা নিয়ে মেম্বারকে ধাওয়া দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে মেহেন্দীগঞ্জ থানায়। তারা হলেন- দড়িরচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বাচ্চু দেওয়ান।
বাচ্চু দেওয়ানের দাবি, চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মেম্বারদের তোয়াক্কা না করে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। এ কারণে বারবার তাকে বিষয়গুলো অবহিত করা হলেও কর্ণপাত না করে তার ইচ্ছেমাফিক সব ধরনের অনিয়মে জড়িয়ে থাকেন। তাকে সংশোধনের জন্য বলা হলেও আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। আর তার অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
তিনি দাবি করেন, চেয়ারম্যানকে কোনোভাবে নিয়মের মধ্যে আনতে না পেরে ১০ মেম্বার একত্রিত হয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও মেহেন্দীগঞ্জ ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করি। আবেদনে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়। সর্বশেষ শনিবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন।
মেম্বার বলেন, শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় স্টিমারঘাট এলাকায় একটি চায়ের দোকানে চা পান করছি। এ সময় চেয়ারম্যান এসে এসব নিয়ে কথা তোলেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে তেড়ে আসেন। কোপানোর চেষ্টা চালান। দৌড়ে পালাতে গেলে চেয়ারম্যান পিছু ছোটেন। এ সময় কে বা কারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে।
মেম্বার আরও বলেন, এতে আমার জন্য ভালো হয়েছে। সবাই দেখেছে কার দোষ। চেয়ারম্যান কোপানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রামদা নিয়ে বাজারে আসে। নাহলে বাগবিতণ্ডার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান রামদা বের করে তেড়ে আসেন কীভাবে। এরপর স্থানীয়রা তার কাছ থেকে রামদা কেড়ে নেন। এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী দাবি করেন, বাচ্চু মেম্বারদের নিয়ে দল বেধেছে আমাকে সরানোর জন্য। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সুশৃঙ্খলভাবেই চলছিল ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু চুরির সুযোগ না দেওয়ায় তারা এক হয়।
তার দাবি, শুক্রবার বাজারে যাওয়ার পর আকস্মিক মেম্বর বাচ্চু ও তার ছেলে আমার ওপর হামলা চালায়। এতে আমার একটি হাত ভেঙে গেছে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ সময় পকেটে থাকা এক লাখ টাকা বাচ্চু ও তার ছেলে কেড়ে নেয়। এমনকি বাবা-ছেলে রামদা দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। জীবন রক্ষার্থে তাদের কাছ থেকে রামদা ছিনিয়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, দুজনই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।