তেহরান থেকে প্রথম ধাপে দেশে ফিরবেন ২৫ জন

প্রবাস ডেস্ক
  ২২ জুন ২০২৫, ২০:২০

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া দ্রুতই শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এমনকি দেশে ফেরত আসতে আগ্রহী এমন ৯২ বাংলাদেশির একটি তালিকাও পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রথম ধাপে ২৫ বাংলাদেশি নাগরিকের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া গেছে বাংলাদেশিদের। পাকিস্তান সরকার রাজি হয়েছে। তেহরান থেকে ফিরতে আগ্রহী ৯২ জনের একটি তালিকাও পাকিস্তান সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব বাংলাদেশি স্থলপথে ইরান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান সীমান্তে প্রবেশ করবে। এরপর পাকিস্তানের করাচি বা খুব নিকটবর্তী বিমানবন্দর দিয়ে দুবাই হয়ে ঢাকায় ফেরানো হবে। প্রথম ধাপে দেশে ফিরবেন ২৫ জন।
ইসলামাবাদের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের প্রথম দল ইসলামাবাদে প্রবেশ করবে। আগামী ২৫-২৬ জুন এটি হতে পারে। পাকিস্তানে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশটি ত্যাগ করতে হবে বাংলাদেশিদের। সেক্ষেত্রে আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রথম ধাপে বাংলাদেশিরা দেশে প্রবেশ করতে শুরু করবে। 
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পাকিস্তানের অনুমতি পেয়েছি। ৯২ জনের একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। ফিরতে আগ্রহীদের ধাপে ধাপে দেশে ফেরানো হবে। প্রথম ধাপে ২৫ জন দেশে ফিরবেন। এই ২৫ জনের মধ্যে অসুস্থ, নারী, শিশু এবং ইরানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবে। আপাতত তেহরানের বাংলাদেশের দূতাবাস দেশে ফিরতে আগ্রহীদের জড়ো করবে। তারপর সুবিধাজনক সময়ে দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে। তবে আমরা খুব দ্রুত বাংলাদেশিদের ফেরত আনব।

কূটনীতিক ওয়ালিদ তেহরানে পৌঁছেছেন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর আগে দেশে ছুটি কাটাতে তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি ওয়ালিদ ইসলাম ঢাকায় এসেছিলেন। তবে ইরানে সংঘাত শুরু হলে ছুটি বাতিল করে সম্প্রতি তেহরানের উদ্দেশে ওয়ালিদ ঢাকা ছাড়েন। যদিও তেহরান পর্যন্ত পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি তেহরানে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ওয়ালিদ। তুরস্ক হয়ে তেহরান যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়। পরে তুর্কমেনিস্তান হয়েও তেহরানে প্রবেশের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। তারপর অবশ্য তুর্কি সরকারের অনুমতি পেয়ে সীমান্ত দিয়ে তেহরান পৌঁছেছেন ওয়ালিদ।
এক কূটনীতিক বলেন, আমাদের এই অফিসার ঢাকায় এসেছিলেন। তার মাধ্যমে কিছু নগদ অর্থ পাঠানো হয়েছে। তার তেহরানে পৌঁছানো জরুরি ছিল। অনেক চেষ্টার পর তিনি তেহরানে পৌঁছেছেন।
তেহরান দূতাবাসের কূটনীতিক এবং দেশে ফেরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এ কূটনীতিক বলেন, এখনই কূটনীতিকদের দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা আমাদের নেই। তাদের কাজ হচ্ছে, ইরান থেকে যেসব বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে চায় তার ব্যবস্থা করা।

এখনই দেশে ফিরতে চান না শিক্ষার্থীরা
ইরানের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০০’র মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তাদের মধ্যে তেহরানে ১০ থেকে ১২ জন রয়েছেন। চলমান সংঘাতের শুরুর দিকে এসব শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে ফেরার বিষয়ে বেশ আগ্রহী ছিলেন। তবে এখন এসে তারা ভিন্ন কথা বলছেন। তারা পরিস্থিতি আরেকটু পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে চান।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষার্থীরা প্রথমে আগ্রহ দেখালেও এখন তারা দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ। যার জন্য আরেকটু সময় নিতে চান তারা। কেননা, দেশে ফেরত এলে পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যাওয়া কঠিন হয়।