রাজধানীর বিজয় সরণিতে নির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয় প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নামের একটি ভাস্কর্য ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে এ প্রাঙ্গণ। গতকাল শুক্রবার উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নিছক একটি ভাস্কর্য নয়; এটি দেশকে জানার একটি ইতিহাস।
‘মৃত্যুঞ্জয়’ ভাস্কর্যটি ২০২১ ও ২০২২ সালের বিজয় দিবসের প্যারেডে প্রদর্শিত হয়। ‘মৃত্যুঞ্জয় প্রাঙ্গণের’ দেয়ালে স্থান পেয়েছে নানা ম্যুরালও। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে নির্মিত এই চত্বরে সাতটি দেয়াল রয়েছে। এসব দেয়ালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার নেতৃত্ব ও অবদান চিত্রিত হয়েছে। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ পরিদর্শন করেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষা বাংলার অধিকার হরণ করার চেষ্টা হয়েছিল, তখন বঙ্গবন্ধু এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। শুরু হয় মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম। আমরা সেই সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
জাতির পিতা ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে এই স্বাধীনতা ও যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, যুদ্ধ করেছে এবং বিজয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের
উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং একটি উন্নয়নশীল জাতির মর্যাদা পেয়েছে।
উপস্থিত শিশুদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক। আমাদের শিশুরাই স্মার্ট বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে, বাংলাদেশ পরিচালনা করবে। এভাবেই তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে।
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি কথা মনে রাখতে হবেÑ শিক্ষা জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ; অর্থ-সম্পদ কিছুই নয়। শিক্ষা ভালোভাবে গ্রহণ করলে কেউ তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না; ছিনতাইও করতে পারবে না। আর শিক্ষা থাকলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করা যায়।’
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেনÑ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারেক আহমেদ সিদ্দিক ও ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।