জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে টানা তিন দিনের বেশি আলোচনা করেও ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। তাই এসব বিষয় নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তের আগেই মন্তব্য করতে চায় না বিএনপি।
কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটির ওপর ভিত্তি করে দলটি তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে, এমনটি জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৪তম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেহেতু নিম্নকক্ষে নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বিভিন্ন রকমের মতামত থাকার কারণে সাড়ে তিন দিন আলোচনা হয়েছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ব্যাপারে মোটামুটি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত। কিন্তু তার গঠন প্রক্রিয়া কী রকম হবে এবং পাওয়ার ফাংশন কীভাবে হবে সেটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে।
দলের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা সেই জায়গাতেই আছি। আমাদের ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা যে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বলেছিলাম। সেটি হলো, যারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজন, যাদের জাতিগঠনে অবদান আছে এবং যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, তাদের মেধা, প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতার অবদান যেন জাতিগঠনের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়। জাতি যাতে সমৃদ্ধ হয় সেই আইডিয়া থেকেই আমরা এই প্রস্তাবটি রেখেছিলাম। সেখানে আমরা উচ্চকক্ষে ১০০টি আসন রাখার জন্য বলেছিলাম। আমরা বলেছি, বিদ্যমান নারী সংরক্ষিত আসনে যেভাবে আসনের অনুপাতে নির্ধারণ করা হয় সেভাবে উচ্চকক্ষেও হবে।
বিতর্কের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে তিন-চার দিন যাবত। কেউ চান পিআর পদ্ধতিতে। এখানে আবার পাওয়ার ফাংশনের বিষয় আছে। সাধারণ বিল কীভাবে পাস হবে, সংবিধান সংশোধন হলে উচ্চকক্ষে কীভাবে পাস হবে ইত্যাদি। তো ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে কোথাও ঐকমত্যে আসা যায়নি। এখন বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজন আছে কি না সে প্রশ্নও অনেক দল তুলছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, সমস্ত বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন একটা সিদ্ধান্তে আসার কথা। সেই সিদ্ধান্ত জানানোর পরই আমাদের প্রতিক্রিয়া বা সম্মতি-অসম্মতির বিষয়ে জানাতে পারবা। সেজন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সংবিধানের সংশোধন কীভাবে হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি একটি অতিরিক্ত প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেটি মোটামুটি সবাই গ্রহণ করেছে। গণভোট নিয়ে বেশকিছু মতামত আছে। সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।