বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এত জ্বালা কেন? এত অহংকার কেন? আপনাদের ইতিহাস আমরা জানি। আপনাদের ইতিহাস বাংলার মানুষ জানে। অতএব, ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে দায়-দায়িত্ব কার ওপর যাবে, আপনারা ভালো করেই জানেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ঢাকা সেনবাগ ফোরামের উদ্যোগে আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, আমরা নতুন করে বলতে চাই না। আমরা এইটুকু বলতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে নিয়ে, আমাদের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামকে নিয়ে অশোভনীয় কথা থেকে বিরত থাকেন।
তিনি বলেন, বিদেশে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে কালো টাকা দিয়ে। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে দয়া করে তারেক রহমান, মির্জা ফখরুলসহ যাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন এগুলো বাদ দিতে হবে। একটি গোষ্ঠী আমাদের ঐক্যকে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্রকারীদের ধ্বংস করতে হলে আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ফারুক বলেন, আজকে চলমান রাজনৈতিক সংকট আওয়ামী লীগের হাতে তৈরি হয়েছিল, সেটার পরিসমাপ্তি এখনও হয়নি। ১৬ বছরে রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্যে আন্দোলন করে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব সংঘটিত হলো, তখন মনে হয়েছিল, আর তো আওয়ামী লীগ নাই। আর তো দুঃশাসন এদেশে হবে না। আর তো এ দেশে দিনের ভোট রাতে হবে না। এ দেশে আয়না ঘর হবে না। এ দেশে আর নির্যাতন হবে না। এ দেশে তার নতুন রূপে র্যাব গঠিত হবে না। এ দেশে তো আর অপরাধ সংঘটিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বাংলাদেশের সব দল যারা আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশে মানুষকে শান্তিতে রাখার জন্য, নির্বাচনের জন্য আত্মহুতি দিয়েছিল, সেই রক্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা আবার জুলাই-আগস্টের মত আরেক বার ঐক্য সৃষ্টি করে বাংলাদেশে একটি নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাবো।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা দল গঠন করেছেন। আপনারা দেশের মানুষের কাছে যাবেন, বাংলাদেশে আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন, সরকার গঠন করার চেষ্টা করবেন, আপনাদের অবদান আমি কখনও অস্বীকার করি না। কিন্তু আপনারা দল গঠন করার পর কালকে যে কথাটা বললেন, মুজিববাদের চাঁদাবাজদের পাহারা দেওয়ার দল বিএনপি। এতে খুব কষ্ট লেগেছে, ব্যথা লেগেছে। কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, সরকার গঠন করতে চায়, তাদের মুখে অসভ্য উক্তি, বাংলাদেশের মানুষ খুবই কষ্ট পেয়েছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমান ১৬ বছর বিদেশে থেকেও বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সব গণতান্ত্রিক দলকে ঐক্য করে হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনের শক্তি জুগিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অসভ্য উক্তি, বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট পেয়েছে। যারা এইসব অসভ্য ভাষা, অরাজনৈতিক ভাষায় একটা বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতাকে নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, কটূক্তি করেছেন, নিজেরা ক্ষমা চেয়ে প্রত্যাহার করেন।
তিনি আরও বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। সবাই মিলে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে আমরা সরকারে বসিয়েছি। সে আসনটির সম্মান আমাদের রক্ষা করতে হবে, সে আসনে বসা সবাইকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।
তারেক রহমানকে নিয়ে অসভ্য উক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করে তুলছেন মন্তব্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এই ঘোলাটে করার দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে। যদি আমাদের ১৬ বছরের আন্দোলন, রক্তে অর্জিত সফলতা এবং নির্বাচনের ব্যাঘাত ঘটে এর সব দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এবিএম ফারুকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন মোজাম্মেল হোসেন সেলিমসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা।