ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম

মুজিববাদীদের নয় গোপালগঞ্জ বাংলাদেশপন্থিদের হবে

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৪১

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা আবার গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রতি এনসিপির যে কমিটমেন্ট গোপালগঞ্জের প্রতিও একই উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্য আমরা বিরোধিতা করি। গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো।
মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে রকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞ এবং ৫ অগাস্টের পরে অনেকে 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ' আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত আওয়ামী লীগ কোনও রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।
নাহিদ বলেন, ‘৫ অগাস্টের পরে আমরা বহুবার বলছি, আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেফতার করা হয় নাই। গ্রেফতার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।’

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার নেতাকর্মীরা গতকাল (বুধবার) গোপালগঞ্জে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যাদেরকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়।
প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতারা প্রবেশ করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয় নাই। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি।
পোস্টে তিনি আরও জানান, চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডজ্ঞানকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতো তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে নাহিদ বলেন, শুধু গোপালগঞ্জ নয় সারা দেশে এ গ্রেফতার অভিযান চালাতে হবে। আমরা পুরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি।
নাহিদ বলেন, ওয়াদা করেছিলাম, আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেবো না। আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থিদের হবে।