এক হৃদয়বিদারক চিত্র জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। কেউ খুঁজছেন সন্তান-স্বজন। কারও প্রয়োজন অভিভাবক। রক্ত দেওয়ার জন্য ছুটে এসেছেন অনেকেই। কিছুক্ষণ পর পর সাইরেন বাজিয়ে ঢুকছে অ্যাম্বুলেন্স। তখন প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠছেন স্বেচ্ছাসেবক। একটা প্রাণ বাঁচানোর সে কী আকুতি!
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে ভারী হয়ে উঠেছে চাঁনখারপুলের আকাশ। বার্ন ইনস্টিটিউট ঘিরে মানুষের অস্বাভাবিক দৌড়ঝাঁপ। সবার চোখে মুখে শোকের ছায়া।
এরই মধ্যে একটু পর পর সাইরেন বাজিয়ে আসছে অ্যাম্বুলেন্স। রাস্তা ক্লিয়ার করতে সবাই কাজ করছেন। ইমারজেন্সি ওয়ার্ডে নেওয়া, সেখান থেকে বেডে দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়ায় স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তা করছে স্বেচ্ছাসেবক টিম।
মাঝেমধ্যে মাইকে প্রয়োজনীয় ঘোষণা আসছে। একবার বলা হলো, ‘আরিয়ান নাফিজ আইসিইউতে ভর্তি। তার অভিভাবক প্রয়োজন।’ পরক্ষণেই আবার রক্ত দিতে ডোনারদের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
অন্যদিকে দেখা গেল মেয়ের খোঁজে আব্দুল কাদের তার ভাইসহ এসেছেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। তার মেয়ে আফিয়া তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তার খোঁজ পাচ্ছেন না।
তৃতীয় শ্রেণির সায়মা, পড়তো বাংলা ভার্সনে। তার খোঁজে এসেছেন তার বাবার এক সহকর্মী।
মানবিকতার এক নজিরও দেখা গেলো জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। সিরিয়াল পড়ে গেছে রক্তদানের লাইনে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ এসেছেন স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে।
এরই মধ্যে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান, আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় শাখা শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদসহ রাজনৈতিক নেতারাও এসেছেন খোঁজ নিতে।
এরই মধ্যে এ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহতের তথ্য দিয়েছে আইএসপিআর ও ফায়ার সার্ভিস। তবে আহতদের সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।