আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা কিছু ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি। এ সংশোধনের পর কাউকে গ্রেফতার করতে হলে পুলিশ বা সংস্থার ক্লিয়ার পরিচয় দিতে হবে। আইডি কার্ড দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি গ্রেফতার হচ্ছেন, সে চাহিবামাত্র আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, থানায় আনার পর গ্রেফতার করা ব্যক্তির স্বজনদের জানাতে হবে। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই তার পরিবারকে জানাতে হবে। প্রতিটা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কোন আইনে, কি কারণে গ্রেফতার হয়েছে। সবকিছুর একটা মেমোরেন্ডাম থাকতে হবে।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির শরীরে যদি কোনো আঘাত থাকে বা সে যদি বলে অসুস্থ, তাকে অতিদ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। আমরা বলেছি প্রত্যেকটা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্ট থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আগে ফ্যাসিবাদী আমলে বিভিন্ন এজেন্সি গ্রেফতার করতো। আসামির স্বজনদের পুলিশ, র্যাব গোয়েন্দা সংস্থা একে-অপরেররের কাছে পাঠাতো। র্যাব গ্রেফতার করে বলতো পুলিশ জানে, পুলিশ গ্রেফতার করে বলতো র্যাব জানে। আমরা আইনে বলেছি, যে সংস্থাই গ্রেফতার করুক, তাদের কনসার্ন অফিসে গ্রেফতার করা ব্যক্তিকে কেন, কোনো আইনে গ্রেফতার করেছে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, সমস্ত কিছু থাকতে হবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দিতে হবে।
আমরা বলেছি নিয়মিতভাবে প্রত্যেকটি থানায়, জেলা পুলিশের কার্যালয় গ্রেফতার করা ব্যক্তিদের তালিকা থাকতে হবে। কত তারিখে কোনো আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই তালিকা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সন্দেহের অবকাশে ফিফটি ফোরে ইচ্ছে মতো গ্রেফতার করা হতো। সেখানেও আমরা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছি। আমরা বলেছি, আপনি (পুলিশ) যদি সন্দেহের অভিযোগে গ্রেফতার করেন, তাকে (পুলিশ) নিশ্চিত হতে হবে আমি এ লোককে গ্রেফতার করেছি, সে আমার সামনে অপরাধ ঘটিয়েছে এবং আমার (পুলিশ) বিশ্বাস করার কারণ আছে, সে আমার সামনে অপরাধ ঘটিয়েছে। এবং সেটা তাকে লিখিতভাবে এক্সপ্লেইন করতে হবে। ৭ বছরের নিচে যেসব অপরাধ, এসব ক্ষেত্রে তাকে সন্তুষ্ট হতে হবে, আমি যদি তাকে গ্রেফতার না করি, সে পালিয়ে যাবে। এই দুইটা কন্ডিশন ফুল ফিল করলে ৫৪ এর আন্ডারের গ্রেফতার করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা আইন করেছি, সেখানে অনলাইন বেল বন্ড সাবমিশনের বিধান আছে। সেখানে ডিজিটালি ওয়ারেন্ট দেওয়া যাবে। এছাড়া বিচারিক তদারকি স্ট্রং করেছি। এই আইন যদি সঠিকভাবে পালন করা যায়, তাহলে মানুষকে আর ইচ্ছামতো গ্রেফতার কিংবা গুম করা যাবে না। এসব আইন সংশোধনে মানুষকে হয়রানি বন্ধ হবে। এবং এটা যুগান্তকারী ভূমিকা হিসেবে পালন করবে বলে তিনি জানান।
মাইলস্টোনে নিহতদের ঘটনায় পরিবারের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। মাইলস্টোন স্কুলের সঙ্গে কথা বলে সব কিছু করা হবে। আগামীকাল সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া অনুষ্ঠান হবে। মর্মান্তিক ভাবে দুইজন শিক্ষিকা মারা গেছেন। উনাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।