যুক্তরাষ্ট্র-জাপান ‘বিশাল’ বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:২২

বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম দুই শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে ‘বৃহৎ’ বাণিজ্য চুক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ চুক্তিকে “সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “এই চুক্তি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করেছি। সবসময়ই আমি বলেছি, চুক্তি হতে হবে উভয় পক্ষের জন্যই উপকারী।”
চুক্তির আওতায় জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি জাপানি বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য। ট্রাম্প জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী জাপান ১৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দিতেও সম্মত হয়েছে।
জাপানি প্রধান বাণিজ্য আলোচক রিওসেই আকাজাওয়া সামাজিক মাধ্যমে জানান, তিনি হোয়াইট হাউসে আলোচনা শেষ করে “মিশন সম্পন্ন” করেছেন। তবে চুক্তির বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ওয়াশিংটনে জাপান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগেও উত্তেজনা ছিলো দুই দেশের মধ্যে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ১ আগস্টের মধ্যে সমঝোতা না হলে জাপানি পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এর আগে এপ্রিলে ট্রাম্প ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন, যদিও সেটি পরে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়।
‘লিবারেশন ডে’ নামক নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র কিছু দেশের ওপর একতরফাভাবে বাণিজ্য শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল, যার প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক বাজারে। এ পরিস্থিতিতে জাপানের সঙ্গে এই চুক্তি অনেকটাই উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখতে পারে।
এ চুক্তির খবরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে জাপানের শেয়ারবাজারেও। টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে যায়। বিশেষ করে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান— টয়োটা, নিশান ও হোন্ডার শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও আরেকটি বাণিজ্য চুক্তি খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। এছাড়া আরও কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাপানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। সম্প্রতি নির্বাচনে পরাজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি দেশটির উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। চুক্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় ইশিবা জানিয়েছেন, “আমরা এখনই মন্তব্য করতে চাই না, যতক্ষণ না পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ শেষ হয়।”